জুলাই-আগস্টে দেশের ৪৩৮ স্থানে হত্যাকাণ্ড চলে: ট্রাইব্যুনালে তদন্ত কর্মকর্তা
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে দেশের ৪১ জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ড চালান। এছাড়া অর্ধশতাধিক জেলায় আন্দোলনকারীদের ওপর মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়।
আন্দোলন দমনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৫৪তম ও সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে আলমগীর মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো জবানবন্দি দেন। ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ জবানবন্দি নেওয়া হয়। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এরই মধ্যে মামুন আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়ার পর জবানবন্দি পেশ করেছেন।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে তদন্ত কর্মকর্তার পেশ করা জবানবন্দির অংশবিশেষ ও প্রদর্শন করা ভিডিও সরাসরি বিটিভিতে সম্প্রচার করা হয়।
তদন্তের বরাত দিয়ে ট্রাইব্যুনালে আলমগীর বলেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনে সরকার যত গুম, খুন, জখম, অপহরণ ও নির্যাতন করেছে এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতায় টিকে থাকা। এছাড়া তাদের ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে বিরোধী দলমত ও প্রতিপক্ষকে হত্যা, জঙ্গি নাটক, জোরপূর্বক অপহরণ, গুমসহ পাতানো নির্বাচন- সবকিছুর মূলে ছিল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা।
এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্ত করেন উপপরিচালক আলমগীর। সার্বিক সহযোগিতা করেন বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা।
আলমগীর চলতি বছরের ১২ মে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে ৩১ মে সম্পূরক অভিযোগ দেওয়া হয়। ১ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। ১০ জুলাই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে সাবেক আইজিপি মামুনের নিজেকে রাজসাক্ষী করার আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর ৩ আগস্ট থেকে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

