সারাদেশ

সাইফুজ্জামান চৌধুরীর প্রতিষ্ঠানের দুই প্রতিনিধি গ্রেফতার

নিউজ দর্পণ, ঢাকা: ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর দুই প্রতিনিধিকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন- চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানার সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কামাল মাস্টার বাড়ির বাসিন্দা মো. আবদুস সবুরের ছেলে মো. আবদুল আজিজ (৩৯) ও চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানাধীন গুজরা গ্রামের নয়ন পালের ছেলে উৎপল পাল।

এদের মধ্যে আবদুল আজিজ আরামিট গ্রুপের এজিএম ও বেনামি প্রতিষ্ঠান ইম্পেরিয়াল ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী এবং উৎপল পাল আরামিটের এজিএম অ্যাকাউন্টস হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আরামিট গ্রুপ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। গ্রেফতার দুজনকে আজ আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ।

সুবেল আহমেদ বলেন, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশের সম্পদ অর্জন ও দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী উৎপল পাল। তিনি আরামিট গ্রুপের এজিএম। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন উৎপল। তিনি আরও বলেন, জব্দ করা তার দুটি ল্যাপটপ ও দুটি মোবাইল থেকে বিপুল পরিমাণ তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ফরেনসিকের জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, আরামিট গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের মালিক সাজিয়ে কাগুজে প্রতিষ্ঠান ‘ভিশন ট্রেডিং’ করা হয়। কথিত ওই প্রতিষ্ঠানের নামে চট্টগ্রামের ইউসিবি পোর্ট শাখা থেকে কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই ২৫ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। ‘ভিশন ট্রেডিং’ নামে কোনো বাস্তব প্রতিষ্ঠান ছিল না। প্রতিষ্ঠানটির নামে নেওয়া ঋণের টাকা পরে আলফা ট্রেডিং, ক্লাসিক ট্রেডিং, মডেল ট্রেডিং ও ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং নামের আরও কয়েকটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়।

এসব প্রতিষ্ঠান ছিল আরামিট গ্রুপের কর্মচারীদের নামে খোলা। এভাবে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এ ঘটনায় চলতি বছরের ২৪ জুলাই সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর রুকমীলা জামানসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন। ওই মামলায় ১৭ সেপ্টেম্বর দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, এই মামলা ছাড়াও একই ধরনের ঘটনায় ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৩০ জুলাই এবং ২৩ কোটি টাকা আত্মাসাতের ঘটনায় ৭ আগস্ট দায়ের হওয়া দুদকের আরও দুই মামলাতেও গ্রেফতার আবদুল আজিজকে আসামি করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *