বেনজীর কীভাবে স্বপরিবারে দেশত্যাগ করলেন, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের সস্পত্তি-ক্রোক নিয়ে সরকারের দেয়া বক্তব্য ‘লোকদেখানো’ বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার ( ১ জুন) দুপুরে এক আলোচনা সভায় ‘বেনজীর আহমেদ দেশে নেই’ -গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবর তুলে ধরে তিনি এই মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, পত্রিকা দেখলাম, বেনজীর চলে গেছে হি লেফট দ্যা কান্ট্রি। মে মাসের ৪ তারিখে পরিবারে চলে গেছে। যাওয়ার আগে তার একাউন্টগুলো সমস্ত সে খালি করে গেছে, ফিক্স একাউন্টগুলো সেখানে ৬০ কোটি টাকার মতো যেটা পত্রিকায় এসেছে হয়ত আরো বেশিও হতে পারে। আমার প্রশ্ন সে কিভাবে গেলো? এই যে তারা(সরকার) বললো যে, তার সম্পত্তি আমরা ক্রোক করছি.. আদালত থেকে বলালো, দুদক থেকে মামলা করেছে। তাকে কোথাও যেতে দেয়া হবে না এসব বলা হলো। তাহলে ৪ তারিখ স্বপরিবারে পত্রিকা নামটাও দিয়েছে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে করে কিভাবে চলে গেলো সরকারের চোখের নাকের ওপর দিয়ে।
তিনি বলেন, তাহলে এই যে কথা বলছেন যে, কেউ ছাড় পাবে না, আমরা সবাইর বিচার করি। এটা কি আপনি বাংলাদেশের মানুষ সবাইকে আহম্মক মনে করেছেন? বাংলাদেশের মানুষ তো আহম্মক না। সবাই বুঝে, এগুলো সব আপনাদের লোকদেখানো, প্রতারণা এখন পর্যন্ত এই প্রতারণা করে আপনারা দেশ শাসন করেছেন।
লুটের সামাজ্যে পরিণত করেছে এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি সেদিনও বলেছেন, শুধু বেনজীর নয়, এক আজিজ(আজিজ আহমেদ) নয়, অসংখ্য আজিজ আর বেনজীর তারা তৈরি করেছে। সব সময় মনে রাখতে হবে, এরা বাংলাদেশটাকে একটা লুটের সামাজ্যে পরিণত করেছে। লুটপাট বর্গীর দেশ পরিণত করেছে। এখান থেকে আমাদের দেশটাকে রক্ষা করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই দানব যে আছে, যে মনোস্টার সব তচনচ করে দিচ্ছে, তাকে আমরা পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার, গণতন্ত্রের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই-সংগ্রাম করছি। একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে, বিজয় আমাদের অর্জন করতেই হবে, সাফল্য আমাদের আনতেই হবে। আজকে এই পেশাজীবীদের আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা একটা জিনিস পরিস্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশে বিএনপি কখনোই তার অভিষ্ট লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়াবে না। তার লক্ষ্য অটুট আছে। কৌশল অনেক সময় পরিবর্তন হতে পারে, সেটাই করি আলোচনা করে ঠিক করব। তবে একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের যে রাজনীতিটা জিয়াউর রহমান সাহেব যে পতাকা তুলে ধরেছিলেন সেই পতাকাৃ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের রাজনীতির যে দর্শন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্রের যে দর্শন সেটা পরবর্তিকালে তুলে নিয়ে এগিয়ে গেছেন আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এখনো কিন্তু আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবের নেতৃত্বে আমরা সেই পতাকাকে নিয়ে এগুচ্ছি। তারেক রহমান সাহেব সেই বিশ্বাসেই এগিয়ে চলেছেন, দিনরাত পরিশ্রম করছেন, আমাদের সকলকে সংগঠিত করবার চেষ্টা করছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটা কথা আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে,সাকসেস হ্যাজ অনলি ফেভারসৃ যখন সাফল্য আসে তখন সবাই দাবি করে যে আমার জন্য হয়েছে, আমার জন্য হয়েছেৃ ফেইলিউর হ্যাজ নান। আমরা মনে করি, আমরা ব্যর্থ নই। আমরা নতুন করে উজ্জীবিত হয়েছি, আমরা নতুন করে আবার কাজ শুরু করেছি। ইনশাল্লাহ জয় আমাদের হবেই। কারণ আমরা সত্যের পথে ন্যায়ের পথে লড়াই করছি।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, রুহুল আমিন গাজী, অধ্যপক আাফম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অ্যাডভোকেট মাসুম আহমেদ তালুকদার, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী, অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, মোস্তাফিজুর রহমান, শহীদুল ইসলাম, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ডা. রফিকুল ইসলাম, শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।