নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে সংকট তৈরির ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে: ফারুক
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার যখন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলে দিলেন, তখনই হত্যাকাণ্ড। তখনই এই বিব্রতকর অবস্থা। বাংলাদেশে বিরাজমান সংকট তৈরি করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের উদ্যোগে ‘শেখ হাসিনার নির্দেশে ৬ জুলাই ২০১১ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুকের ওপর হামলা এবং হত্যাচেষ্টায় পুলিশ বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ ও বিপ্লব কুমারকে দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শাস্তির দাবিতে’ প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘নাম উল্লেখ করতে চাই না; অনেকে বলেছেন, ধানের শীষ দরকার নাই। শাপলা যদি না হয়, ধানের শীষও বাতিল করতে হবে। অনেকে বলেছেন, বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে স্বাধীনতা সম্পূর্ণ অর্জিত হয়নি। অনেকে বলেছে, উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রয়োজন। অনেকে বলেছেন, জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এবং চলমান ১৮ বছরের সকল বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা যাবে না।’
এসময় তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার ঘটনায় ছাত্রদল, যুবদল সংবাদ সম্মেলন করে স্পষ্ট বিবৃতি দিচ্ছে। কিন্তু হারুন, বিপ্লবদের বিরুদ্ধে যে মামলা আমি দায়ের করেছিলাম, এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারা কোথায় আছেন, কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না—এ বিষয়ে জনগণকে জানাতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘মিটফোর্ডের এই হত্যার সাথে যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে হবে। ব্লগার অভিজিৎকে যখন ফুটপাথে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ তাদের বহিষ্কার করেনি। তারেক রহমান বিষয়টি শোনার সাথেসাথেই তাদের আজীবন বহিষ্কার করেন। এ ঘটনায় বিএনপি সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে।’
বিরোধী দলের সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, ‘খুঁজে বের করতে হবে গত পরশুদিনের এই ঘটনার মূল হোতা কে? তারেক রহমান, প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনের বৈঠক এবং ফেব্রুয়ারি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এটি আরেকটি মূল চক্রান্ত বলে আমি মনে করি। যখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলে দিলেন, তখনই হত্যাকাণ্ড। তখনই এই বিব্রতকর অবস্থা। বাংলাদেশে বিরাজমান সংকট তৈরি করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়। আমার মনে হয়, আপনার সবকিছু কানে না নিয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সরকার ও সংসদ কায়েম করা দরকার।’
‘কারণ, আজ এক বছর বিলম্বিত হলেও এখনো বাংলাদেশের যে অবস্থা, এ অবস্থায় অন্তবর্তীকালীন সরকার কিছুতেই সামাল দিতে পারছে না। তাই দরকার নির্বাচন। তাই দরকার, জনগণের ভোটে যে দল জিতবে, সেই দল সরকার গঠন করবে।’
ফারুক আরও বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি কথাই বলে যাচ্ছেন—দেশের দরকার গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। এবং বাংলাদেশের মানুষ যে আশা নিয়ে আপনাকে প্রধান উপদেষ্টা পদে বসিয়েছেন, আপনার কাছে অনুরোধ রইল, অচিরেই জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’
সংগঠনের সভাপতি মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজ প্রমুখ।