পিআর নিয়ে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলনেরকর্মসূচি গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়: মির্জা ফখরুল
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ইসলামী দলগুলোর ‘রাজপথে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ‘গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরার পর হয়রত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমি মনে করি, এটার(কর্মসূচি) কোনো প্রয়োজন ছিলো না। আলোচনা তো শেষ হয়নি এখনো। আলোচনা চলছেৃ আলোচনা চলা অবস্থায় এই ধরনের কর্মসূচির অর্থই হচ্ছে, এই যে একটা অহেতুক একটা চাপ সৃষ্টি করা। যেটা আমি মনে করি যে, গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয় এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারেও শুভ নয়।
আলোচনার টেবিলে সমাধান হচ্ছে না বলেই জামায়াত রাজপথে নেমেছে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের বক্তব্যে প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে বিএনপি মহাসচিব পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, এভাবে রাজপথে আসলেই সমাধান হয়ে যাবে। আমার পাল্টা প্রশ্ন রাজপথে আসলেই কী সমাধান হয়ে যাবে? আমরা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এই পরিবর্তনের পরে আমরা কিন্তু কোনো ইস্যুতে রাজপথে আসিনি। আমরা আলোচনার মাধ্যমেই সমস্ত কিছু সমাধান করতে চাচ্ছি।আমরা বিশ্বাস এটা আলোচনা মাধ্যমে শেষ হবে। বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে স্ত্রী রাহাত আরাকে নিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে সন্ধ্যায় দেশে ফিরেন মির্জা ফখরুল।
পিআর এর বাংলাদেশে প্রয়োজনীয়তা নেই বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বারবারই বলেছি, পিআর এর ব্যাপারে আমাদের অবস্থান খুব পরিস্কার। আমরা পিআর এর পক্ষে নই। আমরা মনে করি যে, বাংলাদেশের পিআর এর কোনো প্রয়োজনীয়তা নাই। আর জুলাই সদনের আলোচনা চলছে। অনেকগুলো ইস্যুতে আমরা একমত হয়েছিৃ সেই বিষয়গুলো নিয়ে সামনে আসলেই হয়। তিনি বলেন, এ একটা বিষয় পরিস্কারভাবে আমি বলতে চাই, এখানে যেটাই করা হোক সেটাতে জনগণের সমর্থনটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। জনগণের সমর্থন আসে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্টের মধ্য দিয়ে আসবে সেটাতে।কারণ সংসদই একমাত্র অধিকার রাখে সে সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবে, সংবিধান সংশোধন করতে পারবেৃ সেখানেই সম্ভব।
জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের নিষিদ্ধ করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য পরিস্কার করে আগেও বলেছি, এখনো বলছি, আমরা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ইনশাল্লাহ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খুব শিগগিরিই ফিরবেন।
জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের সফরসঙ্গী হওয়ার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি এটা এখনো নিজেই জানি না যে, সেখানে আমাদের ভূমিকাটা কি হবে? কারণ ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সাথে এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এই ব্যাপারে আমার কোনো কথা হয়নি। কথা হলে আজকে হয়ত জানতে পারব। আমরা মনে হয় যে, দেশের গণতন্ত্র উত্তরণের বিষয়টি সেখানে প্রাধান্য পাবে এবং একই সঙ্গে দেশের উন্নয়নের ব্যাপারটা প্রাধান্য পাবে এটা আর কি?
দেশের সিদ্ধান্ত প্রায়শই বাইরে হয় দেখছি এরকম প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি মনে করি না। আমাদের সিদ্ধান্ত আমাদেরকে সমন্বিত প্রচেষ্টায় ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদেরকেই নিতে হবে। আমরা সবসময়ই আমাদের বাংলাদেশের যে সিদ্ধান্তগুলো সেগুলো আগেও আমরা দেশে নিয়েছি, এখন আমরা নিজেরা নিজেরাই নেবো, এদেশের মানুষেরাই নিয়েছে। আমি মনে করি, বাইরের সিদ্ধান্তের কোনো প্রয়োজন নাই। বিএনপি নেতা ফরহাদ হোসেন আজাদ, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানসহ বিমানবন্দর ও উত্তরা বিএনপির নেতৃবৃন্দ এই সময়ে বিমান বন্দরের টার্মিনালে বিএনপি মহাসচিবকে স্বাগত জানায়।