রাজনীতি

দেশের অর্থনীতিতে ‘গণতন্ত্রায়ন বিএনপির লক্ষ্য: খসরু

নিউজ দর্পণ, ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, শুধু রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক করলে চলবে না , অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিক করতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিককে অর্থনীতি ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশীদার হতে হবে। কোন একক গোষ্ঠিকে পৃষ্ঠপোষকতা করে অর্থনীতি চালানো যাবে না। অর্থনীতি সকলের জন্য হতে হবে । প্রত্যেকটি নাগরিক যাতে অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারে , উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারে। গ্রামের থেকে শুরু করে, শিক্ষিত যারা আছে তাদের জন্য সকলে যাতে অংশগ্রহণ করতে পারে তার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করছি আমরা। নারী থেকে শুরু করে রিটায়ার্ড করা ৬০ বছরে মানুষকে কাজে লাগাতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে “জুলাই গণঅভ্যুত্থান ১ম বর্ষ যুগপৎ আন্দোলন শরিক দল” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, প্রত্যেকটি নাগরিক যাতে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার ভূমিকা রাখতে পারে , সেই চিন্তা করছি। এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নাগরিকদের যখন আয় বাড়বে তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়বে তখনই তারা সুনাগরিক হবে। তারা ট্যাক্স দেবে । তখন ট্যাক্সের টাকা দিয়ে দাবি করতে পারবে, আমার ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এটা করা যাবে না। আমার টাকায় সেটা করা যাবে না। আমার ট্যাক্সের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতে হবে বাংলাদেশের জন্য।

আমীর খসরু বলেন, ২৪ আন্দোলনের কৃতিত্ব নেওয়ার কোন প্রয়োজন নাই । এটি সমস্ত বাংলাদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ফলাফল । রাজনৈতিক দলগুলোকে দাবি সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মালিক জনগণ, তারা সিদ্ধান্ত নিবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে সংস্কৃতি বদলাতে হবে। সহনশীল হতে হবে। অপরের সাথে দ্বিমত পোষণ করে তার প্রতি , তার মতের প্রতি সম্মান জানাতে শিখতে হবে।

শেখ হাসিনা কিছু কিছু ক্ষুদে স্বৈরাচার রেখে গেছে এমন মন্তব্য করে খসরু বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে সংসদে পাশ করুন , এটাই হচ্ছে গণতন্ত্র। সেটা না করে যদি কেউ বলে আমাদের এই দাবি না মানলে নির্বাচন করব না অথবা আমরা আন্দোলন করব। এটা হচ্ছে অগণতান্ত্রিক। এটা শেখ হাসিনার চিন্তার প্রতিফলন, এটা থেকে বোঝা যায় ।

তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে একটা জিনিস প্রতিষ্ঠিত, বিপ্লব উত্তর সমস্ত দেশে যত তাড়াতাড়ি নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে সেই সমস্ত দেশগুলো ভালো করছে। আর যে সমস্ত দেশের বিপ্লব পরবর্তী এই ধরনের কাজ করেনি তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বিধা সৃষ্টি করার প্রচেষ্টায় চলছে, সেই দেশগুলোতে এখন গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশগুলোতে সমাজ বিভক্ত ,সেই দেশের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়েছে, গণতন্ত্র তো দূরের কথা । এই জন্য আমাদের এক বছর অলরেডি অতিরিক্ত হয়ে গেছে, যত তাড়াতাড়ি জনগণের ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততক্ষণ জনগণের অধিকার মালিকানা , স্বাধীনতা মুক্ত চিন্তা কিছুই থাকবে না। দিনের শেষে দেখবেন, একটা সাংঘর্ষিক জাতি হিসেবে আমরা একে অপরের সাথে যুদ্ধ করছি।

তিনি বলেন, আগামী দিনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ হচ্ছে। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং একটার পর একটা সুষ্ঠ নির্বাচন করে যেতে হবে। গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া হচ্ছে কারেকশন প্রসেস ,এটা কারেক্ট করে । কারণ জনগনের কাছে আপনাকে আবার যেতে হবে। এটা যদি মাথায় থাকে তাহলে আপনি জনগণের পক্ষে থাকবেন । আর যদি মনে করেন শেখ হাসিনার মতো ভোট দখল করে থেকে যাবেন, তাইলে আপনি স্বৈরাচার হবেন। তাই নির্বাচন হচ্ছে ফিল্টারেশন প্রসেস, এই প্রসেসের মাধ্যমে জনগণের চিন্তার প্রতিফলন হয় আর দ্বিতীয় কোন পন্থা নেই। আর যদি অন্য পন্থা চিন্তা করছেন, তবে এটা আগামীদিনে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ ক্ষতি নিয়ে আসবে। সুতরাং আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি সেটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা রফিকুল ইসলাম সহ বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *