বিনোদন

নতুন বাংলাদেশের আশায় ফারুকী, পরীমনি লিখেছিলেন ‘শান্তি চাই’

নিউজ দর্পণ, ঢাকা: আজ ৫ আগস্ট। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোনের মুখে এদিনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এ আন্দোলনে ছাত্র-জনতার পাশাপাশি দেশের শোবিজ অঙ্গনের মানুষও সংহতি জানিয়ে ছিলেন। আন্দোলনের সূচনা লগ্ন থেকেই শোবিজ তারকারা অনলাইনে ও অফলাইনে সক্রিয় ছিলেন।

তাদের মধ্য থেকে কয়েক জন গত বছর আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর বক্তব্য নিয়ে এ প্রতিবেদন-

চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী (বর্তমানে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা) বৈষমীবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান নেন। গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্রদের একদফা দাবি আদায়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ফারুকী জানিয়েছিলেন তিনি কেমন বাংলাদেশের প্রত্যাশা করেন।

এদিন দুপুরে ফারুকী লিখেছেন, ‘ধৈর্য এবং সংযম, প্রিয় ভাই ও বোনেরা। ভালোবাসা সবাইকে।’ ঘণ্টাখানেক পর তিনি লেখেন, ‘৩৬ জুলাইয়ে স্বাধীন দেশে স্বাগতম! কী করে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের স্থপতির কন্যা থেকে পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম এবং নিষ্ঠুরতম স্বৈরশাসকে পরিণত হলো শেখ হাসিনা, এটা ভবিষ্যতে ইতিহাসের ছাত্ররা মনোযোগ দিয়ে পাঠ করবেন। এবং রাজনীতিকরা শিক্ষা নেবেন আশা করি।’

ফারুকী আরও লিখেছিলেন, ‘বিজয়ের আনন্দ অবশ্যই করবো! কিন্তু এখন সময় সংযমেরও, চোখকান খোলা রাখারও। আমরা ২০ বছর প্রতিহিংসার রাজনীতি দেখেছি। প্রতিহিংসার উত্তর দিবো আমরা কাইন্ডনেস এবং এমপ্যাথি দিয়ে। পাশাপাশি আমরা চোখ খোলা রাখবো আগামী দুই তিন দিন। নিশ্চয়ই আমরা একটা মানবিক গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের দিকে আগাইয়া যাব। লাস্টলি, স্যালুট টু বাংলাদেশী ইয়ুথ অ্যান্ড পিপল ফ্রম অল ওয়াকস। টুগেদার উই স্ট্যান্ড টল।’

শেখ হাসিনার পতনের পর চিত্রনায়িকা পরমিনি সংযত ও দায়িত্ববান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন সবাইকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সেই শুরু থেকেই ছিলেন এ ঢালিউড তারকা। ছাত্র-জনতার এক দফা দাবি পূরণ হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

সেই দিন বিকেলে পরীমণি ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘শান্তি চাই! লুটপাট, থানা আক্রমণ, প্রতিহিংসা চাই না! আমরা সংযত হই, দায়িত্ববান হই। প্রিয় বাংলাদেশে আর রক্তপাত চাই না।’
সেদিন (৫ আগস্ট, ২০২৪) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর শেখ হাসিনার পতন প্রসঙ্গে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। এতে তিনি লিখেছিলেন, ‘সন্তানদের মেধা বাংলাদেশের সেরা সম্পদ। এই বাংলাদেশ পরিচালিত হতে হবে মেধাবী দেশপ্রেমিকদের মাধ্যমে। আজ ৩৬ শে জুলাই (৫ই আগস্ট) স্বাধীনতার নতুন সূর্যোদয় দেখেছে বাংলাদেশ। মনে রাখতে হবে- স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে, ধৈর্য্য ধরতে হবে।’

তিনি তার স্ট্যাটাসের শেষে লিখেছিলেন, ‘দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা। সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল। সাবাশ বাংলাদেশ। ভালবাসা অবিরাম।’

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে অভিনত্রেী আজমেরী হক বাঁধন ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘এখনই সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ বন্ধ করার ডাক দিচ্ছি। আমি সবাইকে শান্ত থাকার এবং শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার খবর গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন যদি আমাদের হিন্দু ভাই-বোন এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করা হয়।’

তিনি আরও লিখেছিলেন, ‘আমরা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু বর্তমান সহিংসতা নিন্দনীয়। এই বিপ্লব অযৌক্তিক আক্রমণের কারণে কলঙ্কিত হতে দেওয়া যাবে না। আমরা প্রতিবাদকারীদের কাছে অনুরোধ করছি, শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন এবং সেনাবাহিনীকে ছাত্রদের সাথে সরাসরি আলোচনা করতে দিন, যারা আবারও আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে।’

সব শেষে তিনি লিখেছিলেন, ‘আসুন, আমরা একসাথে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করি। দয়া করে বাড়ি ফিরে যান এবং সকল ধরণের সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করুন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *