আন্তর্জাতিক

ব্রিকস সম্মেলনে যাচ্ছেন না পুতিন-শি জিংপিং

নিউজ দর্পণ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে আজ রোববার পর্দা উঠছে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের। তবে প্রথমবারের মতো এ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। একই সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও সশরীরে এ সম্মেলনে হাজির থাকছেন না।

এবারের সম্মেলনে জোটটির সদস্যভুক্ত দেশগুলোর নেতারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর বাণিজ্যনীতি বা নতুন শুল্কনীতির কড়া সমালোচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া পশ্চিমা বিশ্বের আধিপত্য নিয়ে উদ্বেগ মোকাবিলায় কীভাবে নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা আরও দৃঢ় করা যায়, ব্রিকস নেতাদের আলোচনায় সে বিষয়টিও গুরুত্ব পেতে পারে। খবর আল-জাজিরার।

এদিকে, ২০১২ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আরোহনের পর ব্রিকসের কোনো শীর্ষ সম্মেলনে শি জিনপিং ছিলেন না, এমন নজির নেই। এবার রিওতে তার প্রতিনিধিত্ব করবেন চীনা প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং।

অন্যদিকে, ২০২২ সালের শুরুর দিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। ব্রাজিল যেহেতু আইসিসির সদস্য দেশ, সেদিক থেকে পুতিন দেশটিতে গেলে তাকে গ্রেফতারে চাপে পড়তে পারে ব্রাসিলিয়া। ধারণা করা হচ্ছে, এ ধরনের জটিলতা এড়াতেই ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে সশরীরে থাকতে চাইছেন না প্রেসিডেন্ট পুতিন।

তবে শীর্ষ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ এ দুই নেতার যোগদান না করা জোটটির অভ্যন্তরীণ সংহতি ও বৈশ্বিক প্রভাবকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে।

ব্রিকস দেশগুলো বরাবরই বলে আসছে, তারা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধের বেশি, মোট ভূমির ৩৬ শতাংশ ও বিশ্ব অর্থনীতির এক চতুর্থাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। এ জোট নিজেদেরকে ‘গ্লোবাল সাউথের’ দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার একটি ফোরাম এবং পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন অর্থনৈতিক জোট জি-৭ এর প্রতিপক্ষ শক্তি হিসেবে বিবেচনা করে।

তবে পর্দার আড়ালে জোট দেশগুলোর মধ্যে বিভাজনও স্পষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থার দাবি, গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা এবং ইরানের ওপর সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে কিছু সদস্য দেশ জোটটিকে আরও সুদৃঢ় অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য সংকট ইস্যুতে অখণ্ড অবস্থানে থাকার ক্ষেত্রে বিভাজন কাটাতে হিমশিম খাচ্ছে জোটটি।

এদিকে, ব্রিকসের এবারের শীর্ষ সম্মেলনে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি যোগ দিচ্ছেন, না প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র আল-জাজিরাকে এ তথ্য জানিয়েছে।

ব্রিকসের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এই পাঁচ দেশের নামের প্রথম অক্ষর নিয়েই ব্রিকস শব্দটি এসেছে। ২০০৯ সালে এ জোটের প্রথম সম্মেলন হয়। পরবর্তী সময়ে এর একে একে জোটের পূর্ণ সদস্য হয় মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

জোটটির ১০টি কৌশলগত অংশীদার দেশও রয়েছে এখন। গত বছর তৈরি করা এ ক্যাটাগরিতে রয়েছে বেলারুশ, কিউবা ও ভিয়েতনাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *