জনগণ তাদের মালিকানা হারিয়ে ফেলেছে: খসরু
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: কোটা সংস্কারের মতো গণতন্ত্রের জন্যও শিক্ষার্থীদেরকে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার (১২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে গণতন্ত্র মঞ্চ উদ্যোগে যুগপৎ আন্দোলনের ৩১ দফা ও এক দফা ঘোষণার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়ে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার যেভাবে রাষ্ট্র চালাচ্ছে, এতে আগামী দিনে মেধাবী বাংলাদেশের কোন সুযোগ নেই, বাংলাদেশকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। কারণ আমার মনে হয় না বাংলাদেশকে তারা মেধাবী রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। কারণ মেধাবীরা সত্যি কথা বলে, সত্যের পথে চলে, প্রতিবাদ করে, প্রতিরোধ করে।
সকালের টানা বৃষ্টিতে ঢাকার বিভিন্ন স্থান ডুবে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহর তো ডুববেই কারণ মেধাবী লোকজন তো কোথাও নেই। যারা পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত বিভিন্ন কাজ করে, সেখানে মেধাবী লোকদের নিয়ে আসতে হবে। দলীয় লোকজন দিয়ে যদি চালানো হয় তাহলে ঢাকা ডুববে, সারা বাংলাদেশ ডুববে। আর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে তো এমনিতেই ডুবে গেছে, এখন শুধু পানির ডুবা দেখতে পাচ্ছেন। সবদিক থেকে বাংলাদেশ ডুবে গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরো বলেন, বাংলাদেশের জনগণ তাদের মালিকানা হারিয়ে ফেলেছে। এই মালিকানা কেউ কেড়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের মূল মালিকানা ফিরিয়ে আনতে একটি বড় বিষয় ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর জাতীয় ঐক্য। কোন প্রক্রিয়ায় এই মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া হবে তা আমাদের ৩১ দফায় ছিল। যে আমরা কিভাবে মালিকানা ফিরিয়ে দিব। মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হলে সংবিধানে কি কি পরিবর্তন করতে হবে, বিচার ব্যবস্থায় কি পরিবর্তন আনতে হবে, সংসদের মধ্যে কি পরিবর্তন আনতে হবে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় কি পরিবর্তন আনতে হবে, সামাজিক ব্যবস্থায় কি পরিবর্তন আনতে হবে। আমির খসরু বলেন, জাতীয় ঐক্য ছাড়া রাষ্ট্র সংস্কার, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করার কোন সুযোগ নেই। এই ঐক্যমত শুধু এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলনের নয়, আমরা এই সরকারকে বিদায় করে আগামী দিনের বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে পরিবর্তনের যে প্রত্যাশা সেই প্রত্যাশা তুলে ধরতে পেরেছে কিনা। আমি মনে করি ৩১ দফা বিশদভাবেই সেই কাজটি করতে পেরেছে। তবে যেটি করতে পারিনি, এই ৩১ দফা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় স্পর্শ করাতে পারিনি। এটা আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারিনি।
তিনি আরো বলেন, আমরা যদি সবাই মিলে ৩১ দফা বাস্তবায়নের গ্যারান্টি দিতে পারি, দেশের মানুষের কাছে পৌঁছতে পারি, ৩১ দফাকে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে পারি, বাস্তবায়ন কিভাবে সেটি পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে এই স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আজকের যে আন্দোলন তা পরিপূর্ণতা লাভ করবে। মানুষের কাছে এই ৩১ দফা পৌঁছে দিতে প্রয়োজনে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো আরো বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানি অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক দলের সহ-সভাপতি তানিয়া রব, গণ অধিকার পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।