বিনোদন

স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান


নিউজ দর্পণ, বিনোদন প্রতিবেদক: প্রখ্যাত গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আজ (১৫ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দেশের সংগীত ভুবনে গীতিকার হিসেবে রফিকউজ্জামান বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছেন। তিনি চলচ্চিত্র, আধুনিক, দেশাত্মবোধকসহ সব ধরনের মৌলিক গান লিখে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তবে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান চলচ্চিত্রের গান লিখে সবচেয়ে বেশি প্রশংসা লাভ করেছেন।

গুণী এ গীতিকারের লেখা অসংখ্য গান দেশীয় চলচ্চিত্রের গানের অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছে। তার গান শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারতেরও অনেক শিল্পী কণ্ঠে তুলে নিয়েছেন। বাংলা সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সরকার বরেণ্য এ গীতিকারকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছে।

প্রখ্যাত গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ জেলার লক্ষ্মীপুরে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। যশোর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন (এসএসসি), সরকারি মাইকেল মদুসূদন মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবনে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশ বেতারে চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত এখানে চাকরি করেন তিনি। ২০০৪ সালে লন্ডনের চ্যানেল এস-এ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে পালন করেন। ২০০৭ সালে বৈশাখী টেলিভিশনে অনুষ্ঠান প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন।

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান ১৯৬৫ সাল থেকে বাংলাদেশে বেতারে নিয়মিত গীতিকার হিসেবে গান লেখা শুরু করেন। তার প্রকাশিত গানের সংখ্যা প্রায় দুই হাজারেরও বেশি।

১৯৭৩ সাল থেকে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্রের জন্য গান লিখছেন। তিনি শতাধিক চলচ্চিত্রের জন্য গান লিখেছেন। গান ছাড়াও মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান বেতার, মঞ্চ এবং টেলিভিশনের জন্য অসংখ্য নাটকও রচনা করেছেন।

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান একাধিকবার শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ফলে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন তাকে যেন আর গানের জন্য চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা না হয়। এর পরিবর্তে নতুন গীতিকারদের যেন এই পুরস্কার দেওয়া হয়- সে কথাও তিনি বলেন।

জনপ্রিয় গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান রচিত শ্রোতাপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল’, ‘সেই রেললাইনের ধারে মেঠোপথটার পারে দাঁড়িয়ে’, ‘ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়’, ‘দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক’, ‘যদি মরণের পরে কেউ প্রশ্ন করে’, ‘আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়’, ‘আমার বাউল মনের একতারাটা’, ‘চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ’, ‘পদ্ম পাতার পানি নয়, দিন যাপনের গ্লানি নয়’, ‘মাঠের সবুজ থেকে সূর্যের লাল’, ‘যেখানে বৃষ্টি কথা বলে’, ‘আমি নদীর মতন বয়ে বয়ে’, ‘শুক পাখিরে, পিঞ্জিরা তোর খুলে দিলাম আজ’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার শত্রু বলে গণ্য হলাম’, ‘আকাশের সব তারা ঝরে যাবে’ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *