জাতীয়

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়লেও ভোক্তার কাছে সস্তা হচ্ছে তামাকজাত দ্রব্য: গবেষণা ফলাফল


নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য। অথচ এই একই প্রেক্ষাপটে বছর বছর সাশ্রয়ী হচ্ছে তামাকজাত দ্রব্য। ফলে তামাকের ব্যবহার কমছেনা এবং অসংক্রামক রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এফসিটিসি’র আর্টিকেল ৬ এ তামাক নিয়ন্ত্রণে উচ্চ হারে কর বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা সত্ত্বেও কোম্পানিগুলোর নানান মিথ্যাচার ও ছলচাতুরীর কারণে তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধি পাচ্ছেনা। সমস্যা সমাধানে একটি শক্তিশালী করনীতি গ্রহণের পাশাপাশি উচ্চহারে মূল্য ও কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্য ভোক্তার ক্রয়সক্ষমতার উর্দ্ধে নিয়ে যাওয়া জরুরি। এর ফলে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের পাশাপশি সরকারের অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে। এই অতিরিক্ত রাজস্ব জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবারে ভর্তুকির ক্ষেত্রে ব্যয় করলে স্বাস্থ্য উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র যৌথ আয়োজনে আজ বুধবার সকাল ১১ টায় ডাব্ল্বিউবিবি ট্রাস্টের কৈবর্ত সভাকক্ষে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশে তামাক বিরোধী জোটের স্থানীয় সংগঠনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ‘নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি ও ক্রয় সক্ষমতা পরিবর্তনের চিত্র’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এবং ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্স (বিইআর) যৌথভাবে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করে।
উক্ত প্রতিবেদনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির বিপরীতে তামাকজাত দ্রব্য সস্তা হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে।

গবেষণায় বিগত ৫ বছরে ৫টি অতি প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য (ডিম, আটা, চাল, গুড়া দুধ ও মুরগী)’র বাজার মূল্য পর্বেক্ষণ করে দেখা গেছে যে, উল্লেখিত সময়ের মধ্যে ৬০ শতাংশ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। অথচ এই একই সময়ে ৪ টি ভিন্ন মূল্যস্তরের সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১৪.৩ শতাংশ থেকে ৪৮ শতাংশ। যা তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য সহায়ক তো নয়ই বরং জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির সাপেক্ষে এই দ্রব্য ভোক্তার কাছে আরো সহজলোভ্য হয়েছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা’র নির্বাহী পরিচালক মো. বিল্লাল হোসেন, রানি’র নির্বাহী পরিচালক ফজলুল হক খান, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা শামীমা সুলতানা, ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (আইডিএফ) এর চেয়ারম্যান শফিউল আযম, কসমস’র নির্বাহী পরিচালক মেহনাজ পারভীন মালা , এইড ফাউন্ডেশনের এর প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান , বিএনটিটিপি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদূল ইসলাম হিল্লোল, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্স সেলের (টিসিআরসি) প্রজেক্ট ম্যনেজার ফারহানা জামান লিজা, ডাসের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন টিপু, বিইআর এর প্রজেক্ট অফিসার ইব্রাহীম খলিল, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব, প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য, নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা আজিম খান , নাটাবের প্রোগ্রাম অফিসার মো. রবিউস সানি এবং গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির প্রোগ্রাম অফিসার মো. বায়তুল হাসান, সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা ট্রিজা কৃষ্ণা গমেজ এবং নাজমুন নাহার, শিশুদের জন্য মুক্তবায়ু সেবন সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *