২ সন্তানকে বেঁধে পেটানোর ভিডিও পাঠালো স্ত্রীর কাছে, পাষণ্ড পিতা গ্রেফতার
নিউজ দর্পণ, ঝিনাইদহ : সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের দুইটি অবুঝ শিশু সন্তানকে নির্দয়ভাবে পেছনে হাত বেঁধে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় পাষণ্ড পিতা হাবিবুর রহমান শিমুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া গ্রামে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, মাদকসেবী স্বামী শিমুলের অত্যাচারে ঘর ছেড়ে পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেন স্ত্রী শিরিন সুলতানা। স্ত্রী বাড়িতে না আসায় দুই সন্তানকে চেয়ারের সাথে বেঁধে মারধর করে তা ভিডিও করে স্ত্রীর কাছে পাঠায় স্বামী। স্ত্রী শিরিন সুলতানা দুই সন্তানকে নির্দয়ভাবে পেটানোর দৃশ্য দেখে আর ঠিক থাকতে পারেননি। তিনি Beautiful Jhenaidah নামের একটি ফেসবুক পেইজের এডমিনের কাছে ভিডিওটি পাঠিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পোস্ট করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আজ মঙ্গলবার ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশারের নজরে আসলে তিনি দ্রুত শিশু নির্যাতনকারী পিতাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। ভিডিওটিতে দেখা যায়, নিজের দুই সন্তানকে চেয়ারের সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করছে পিতা শিমুল। সেই সাথে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ‘বলছে তোর মা আমার কথা শোনে না কেন’? শিশু সন্তানকে দিয়ে শিমুল ঘর মোছানোর কাজও করাচ্ছেন।
গ্রামবাসী জানায়, ঝিনাইদহ শহর সংলগ্ন ধানহাড়িয়া গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান শিমুলের সাথে বিয়ে হয় শহরের আরাপপুর এলাকার শিরিন সুলতানার। তাদের ২ টি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে শিরিনকে মারধর ও অত্যাচার করে আসছিল শিমুল। অত্যাচার সইতে না পেরে সন্তানদের রেখে পিতার বাড়িতে চলে যান শিরিন। দুই বছর আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে আবার বাড়ি ফিরিয়ে আনার দাবিতে ফন্দি আঁটে শিমুল। সোমবার সন্তানদের চেয়ারের সাথে বেঁধে মারধর ও নির্যাতনের ভিডিও পাঠায় স্ত্রীর কাছে।
শিরিন সুলতানা জানান, বিয়ের পর থেকে শিমুল মারধর করত। এ নিয়ে কয়েক বার শালিস বৈঠক হয়েছে। তার স্বভাব পরিবর্তন না হওয়ায় আমি তাকে তালাক দিয়ে পিতার বাড়িতে চলে এসেছি। কিন্তু এখন ওদের বাবা তাদের উপর চরম অত্যাচার শুরু করেছে। শিমুল নেশা করে। আমার শ্বশুরও বলেছে তুমি এখানে আসলে শিমুল তোমাকে খুন করে ফেলবে। সোমবার সাবেক স্বামী শিমুল ভিডিও করে আমার কাছে পাঠায়। আমি ফেসবুকে দিয়ে এর প্রতিকার চেয়েছি। এখন আমি আমার বাচ্চাদেরকে আমার কাছে রাখতে চাই।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিশু নির্যাতনকারী পিতাকে থানায় আনা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ছেলে ২টিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পিতা শিমুলকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।