হঠাৎ রাস্তায় ঢলে পড়ে ১০ সেকেন্ডেই মৃত্যু চা বিক্রেতার
নিউজ দর্পণ,ঢাকা: দুপুরের ব্যস্ত সড়কে হরদম চলছে মানুষ, তার মধ্যেই হঠাৎ রাস্তায় ঢলে পড়ে মারা গেলেন একজন চা বিক্রেতা।
৩৫ বছর বয়সী হাসানের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ত্রিনগরে। ঢাকায় তিনি থাকতেন মধুবাজারে। ফ্লাস্কে চা নিয়ে পথে পথে ঘুরে বিক্রি করতেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজারীবাগের সুলতানগঞ্জের এক গলি দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ তিনি রাস্তায় পড়ে যান, মৃত্যু ঘটে সেখানেই। ঘটনার আকস্মিকতায় অন্য পথচারীরাও হতবাক হয়ে যান।
সেখানে আসলে কী ঘটেছিল বোঝার জন্য ওই রাস্তার একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
মহানগর পুলিশের ধানমণ্ডি জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, সিসি ক্যামেরার ওই ফুটেজে পুরো ঘটনাটাই ধরা পড়েছে।
“হাঁটতে হাঁটতে এসে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন হাসান। ডান হাতে থাকা চায়ের ফ্লাক্স রাস্তায় নামিয়ে রেখে বাঁ হাতে বুক পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করে ডান হাতে নেন। তারপর কোমরে হাত রেখে বড় করে দম নেন এবং উপুড় হয়ে রাস্তায় পড়ে যান।”
আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, পুরো ঘটনাটি ঘটতে সময় লাগে মাত্র ১০ সেকেন্ড। রাস্তায় তখন দুজন ঝাড়ু বিক্রেতা এবং আরও কয়েকজন পথচারী ছিলেন। পথচারীরা এগিয়ে এলেও তাকে বাঁচাতে পারেননি।
হাসানের মামা শ্বশুর আবু তালেব জানান, হাসান আগে গ্রামের বাড়িতে দিন মজুরের কাজ করতেন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সেখানে কাজ কমে যাওয়ায় চার মাস আগে ঢাকায় চলে আসেন।
মধুবাজারে ছোট্ট একটি টিনশেড ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানেই থাকছিলেন হাসান। প্রতিদিন ফ্লাস্ক নিয়ে বের হতেন চা বিক্রি করতে।
তালেব বলেন, চা-বিক্রি করে প্রতি মাসে স্ত্রী সালমাকে তিন থেকে চার হাজার টাকা পাঠাতেন হাসান। তাই দিয়ে কোনো মতে তিন সন্তানকে নিয়ে চলছিলেন সালমা।
“হাসানের স্বাস্থ্য মোটামুটি ভালো ছিল। কোনো রোগ বালাই ছিল বলে আমাদের জানা নাই। কেন সে এভাবে হঠাৎ রাস্তায় পড়ে মারা গেল, আমরা বুঝতে পারছি না।”
কয়েক বছর আগে হাসানের বাবা আব্দুল আহাদ ও মা সিনিমা বেগম মারা গেছেন। দুই ভাই থাকলেও অভাবের সংসারে তারা নিজেরাই চলেন কষ্ট করে। ফলে হাসানের তিন শিশু সন্তানের আর কোনো আশ্রয় থাকল না বলে জানালেন তালেব।
অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আব্দুল্লাহিল কাফি জানান, স্বজনরা হাসানের মৃতদেহ নিয়ে রাতেই গ্রামের বাড়ির পথে রওয়ানা হয়েছেন।
নিউজ দর্পণ/আরএম