ভারত, চীন ও নেপালের পানিতে সৃষ্ট বন্যায় ১৫ লাখ মানুষ বন্দি: প্রতিমন্ত্রী

নিউজ দর্পণ, ঢাকা: ভারতের মেঘালয়, চেরাপুঞ্জি, আসাম ও ত্রিপুরা এবং চীন ও নেপালের পানি এসে বাংলাদেশে এই বন্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। আজ মঙ্গলবার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে  সচিবালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

এরইমধ্যে দেশের ১৭টি জেলা বন্যায় প্লাবিত এবং ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮২৭ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বন্যা আরও বেশ কয়েকটি জেলায় বিস্তৃত হয়ে আরও সপ্তাহ দুয়েক স্থায়ী হতে পারে বলেও তিনি সতর্ক করেছেন।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, নতুন করে ২৩ জেলায় বন্যা বিস্তৃতি লাভ করবে এবং তা অগাস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হবে। এই মুহূর্তে বন্যাক্রান্ত ১৭টি জেলার ৪৬৪টি ইউনিয়নে দুই লাখ ৯৪ হাজার ২৭৪টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। বন্যায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮২৭ জন।

এনামুর বলেন, আমাদের মাঠ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি, দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা যদি ত্রাণ প্রস্তুত ও বিতরণের কাজে অংশগ্রহণ করে তাহলে অতীতে যেমন বড় বড় বন্যা মোকাবেলা করেছি, একইভাবে এবারও মোকাবেলা করতে পারব, মানুষের দুঃখকষ্ট লাঘব করতে পারব। সরকারের ত্রাণ সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার মতো সক্ষমতা আছে। আরও যত বড় দুর্যোগ আসুক না কেন, দুর্যোগ যত দীর্ঘস্থায়ী হোক না কেন, আমরা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার মতো সক্ষমতা আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা সরকারের আছে।

বেশি বন্যা কবলিত ১২টি জেলায় এক হাজার ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেখানে ২০ হাজার ১০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের রান্না করা খাবার দিতে সেইসব জেলার ডিসিদের পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

এনামুর জানান, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এই বৃদ্ধিটা অব্যাহত থাকবে। কুশিয়ার ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকায় পানির সমতল কমছে, এটা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা ও ধরলার পানি কমবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারী, লালমনিরহাট, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও রংপুরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

অপরদিকে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নাটোর, নওগাঁ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকা জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান, গত ২৭ জুন থেকে যে বন্যা শুরু হয়েছিল সেটা আগাম বন্যা ছিল, সেটা ৬-৭ জুলাই থেকে উন্নতি লাভ করেছে। কিন্তু ১১ জুলাই থেকে আবার পানি বেড়েছে। পানিটা ১৭ জুলাই সর্বোচ্চ বাড়বে। সেই বৃদ্ধিটা আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ স্থায়ী হবে। ২৩টি জেলায় বন্যা বিস্তৃতি লাভ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *