পুলিশ সুপার আবুদর রহিমের বিরুদ্ধে পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ

নিউজ দর্পণ, ঢাকা:  টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (পিটিসি) আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে অমানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছে এক অসহায় পরিবার।আজ শনিবার  বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন-ক্র্যাব মিলনায়তনে এ অভিযোগ করেন অমানসিক নির্যাতনের শিকার টাঙ্গাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে (মহেরা) কর্মরত পরিচ্ছন্নতা কর্মী মো. ফরিদ মিয়া ও তার পরিবারবর্গ। ফরিদ মিয়ার বাড়ি টাঙ্গাইল সদর থানার খাগজানা গ্রামে।

লিখিত বক্তব্যে ফরিদ মিয়া বলেন, আমার উপর মিথ্যা টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী তার নিজের বাংলোয় আটকিয়ে রেখে আমাকে বেধরক মারধর করে এবং পরে তিন দিন বিনা দোষে থানা হাজতে আটকিয়ে রেখে এসপি স্যারের নির্দেশে এসআই আবুল বাশার মোল্লা আমার উপর অমানসিক নির্যাতন চালিয়ে ৭০ হাজার টাকা আদায় করেছে, যা আমার আত্মীয়রা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধার-দেনা করে এনেছে। বর্তমানে আমার চাকরিটিও নেই। আমি অনেকটা নিঃস হয়ে গেছি। আমি ও আমার পরিবার এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছি। আমার অভিযোগ তুলে ফেলার জন্যও তারা বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে চাপ দিচ্ছে। নানা ধরণের হুমকিও দেয়া হচ্ছে। এতে আমি ভয় ও আতঙ্কে জীবন অতিবাহিত করছি।

তিনি বলেন, এই অমানবিক নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আমি ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আজিপি ও টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন জানিয়েছে। যার প্রেক্ষিতে ঘটনাটির তদন্তও শুরু হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব রয়েছে স্পেশাল বাঞ্চের ডিআইজি মো. মাজহারুল ইসলাম। দুঃখজনক যে, এখন পর্যন্ত এসপি আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী ও এসআই আবুল বাশার মোল্লা দুজনই স্বপদে বহাল রয়েছেন। যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে সবাই স্বাক্ষ্য প্রমান দিতে ভয় পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি এসপি আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী ও এসআই আবুল বাশার মোল্লাকে বদলি/প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে পরবর্তীতে আমাকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে পুলিশি হয়রানি বা অন্য যেকানো ক্ষতি সাধন করতে পারে বলে আমার আশঙ্কা। তাই আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে উপরোক্ত দুইজন পুলিশ কর্মকর্তাকে টাঙ্গাইল হতে অন্যত্র বদলি/প্রত্যাহার করার জন্য সরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। পাশাপাশি আমি এই পুলিশ সুপারের রোষানল থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্র্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

লিখিত অভিযোগ ফরিদ মিয়া আরো বলেন, এই এসপির বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। সে প্রায় সময়ই পিটিসির অধিকাংশ স্টাফদের সাথে খারাপ আচরন করে। তার আচরণে পিটিসির অধিকাংশ স্টাফই অতিষ্ট। পাশাপাশি আপনাদের অবগতির জন্য জানিয়ে রাখছি যে, এই এসপি আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজশাহীতে একটি নার্সিং ইন্সটিটিউট দখল ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিতও হয়েছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চলমান আছে। এছড়াও আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী ২০০২ সালে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী, সারদা, রাজশাহী থেকে নিয়ম-শৃংখলা পরিপন্থি কাজ করার জন্য তাকে চাকরি থেকে বহিস্কার করা হয়। পরবর্তীতে কোর্টে মামলা করে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় চাকরি ফিরে পায়।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- ফরিদ মিয়ার স্ত্রী মুক্তা বেগম, ভাবী রেখা বেগম, চাচাত ভাই মো. হাসান মিয়া, আলমগীর হোসেন, মোহাম্মদ ইউনুস আলম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *