টাঙ্গাইলে দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি, ডুবে গেছে ফসল
নিউজ দর্পণ, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ৪২ ইউনিয়নের ৩০৫টি গ্রামসহ কালিহাতী উপজেলা এলেঙ্গা পৌরসভার আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে সাত উপজেলার ৩২৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা। এতে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪১ জন। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ৩৮ হাজার ৪৭৮টি। এছাড়া জেলার ৫ হাজার ২২৬ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, যমুনার পানি গতকালের চেয়ে ২ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে ভূঞাপুরের যোকারচর পয়েন্টে ৬৫ সে.মি, ধলেশ্বরী ১৪৯ সে.মি আর ঝিনাই নদীর পানি ৭৫ সে.মি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় এখন পর্যন্ত টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, ভূঞাপুর, গোপালপুর, নাগরপুর, বাসাইল, দেলদুয়ার, ধনবাড়ী আর মির্জাপুর উপজেলার ৪২ ইউনিয়নের ৩০৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়াও কালিহাতী উপজেলা এলেঙ্গা পৌরসভার আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪১জন। পানিবন্দি লোক সংখ্যা ১ লাক ৫৩ হাজার ৯১২জন। ৭৫২টি সম্পূর্ণ আর ৬২৮১টি ঘর-বাড়ির আংশিক নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। ১৫টি টিউবওয়েল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
নাগরপুরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়াও জেলার ৩৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ১টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ নদী গর্ভে চলে গেছে আর ১৯টির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত ২ কি.মি সম্পূর্ণ আর ১৯৭ কি.মি. আংশিক কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে ৫৫ কি.মি. পাকা সড়কের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ৪টি ব্রিজ সম্পূর্ণ আর ২৩টি ব্রিজের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ২.৫ কি.মি. আংশিক নদী বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার সাত উপজেলার ৩২৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, জেলায় ৪০০ মে.টন জিআর চাল, নগদ ১৩ লাখ টাকা, ২ লাখ টাকার শিশু খাদ্য, ২ লাখ টাকার গো-খাদ্যসহ ৬ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দফার বন্যায় জেলায় ৩ হাজার ৮৩৯ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ২৭ হাজার ২৩৩ জন। চলতি দ্বিতীয় দফার বন্যায় এখন পর্যন্ত ৫২২৬ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। নিমজ্জিত জমিগুলোর ফসলের মধ্যে রয়েছে বোনা আমন, রোপা আমন (বীজতলা), সবজি ও তিল।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলার প্রধান নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার উপরে রয়েছে।পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৫ ও ২৬ জুলাই পানি আরও অধিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।