কুয়েতে আবাসিক অনুমোদন হারিয়েছেন ৪০ হাজার অভিবাসী

নিউজ দর্পণ ডেস্ক: ভিসা নবায়ন করাতে ব্যর্থতার কারণে প্রায় ৪০ হাজার অভিবাসী কুয়েতের রেসিডেন্সি পারমিট বা আবাসিক অনুমোদনের বৈধতা হারিয়েছেন। এসব অভিবাসী নতুন ভিসা না নিলে কুয়েতে ফিরতে পারবেন না। করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আটকা পড়ে আছেন তারা। এ কারণে তারা ভিসা নবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন। তবু রোববার কুয়েতের জেনারেল এডমিনিস্ট্রেশন অব রেসিডেন্সি অ্যাফেয়ার্সের প্রধান ব্রিগেডিয়ার হামাদ রশিদ আল তাওয়ালা এ তথ্য জানিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গালফ নিউজ।
কুয়েতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনিস আল সালেহর নির্দেশকে উদ্ধৃত করে এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন ব্রিগেডিয়ার হামাদ রশিদ আল তাওয়ালা। তিনি বলেছেন, ওই নির্দেশে আবাসিক অনুমোদন ও প্রায় ৬৮ হাজার অভিবাসীর মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট নবায়নের বিষয়ে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

কুয়েতের পত্রিকা আল রাই’কে তিনি আরো বলেছেন, সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস থেকে রেসিডেন্সি পারমিট নবায়ন করাতে পারবেন অভিবাসীরা। এরপর তাকে কুয়েতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অনুমোদন পেতে হবে। যেসব অভিবাসী কোনো অন্যায় বা ভুল করেন নি তাদের প্রতি সহানুভূতি হিসেবে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কারণ, তাদের এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে। প্রায় ৭ হাজার অভিবাসী শ্রমিক, তাদের বেশির ভাগই মিশরীয় ও ভারতীয়, তারা রেসিডেন্সি পারমিটকে উপেক্ষা করেছেন কুয়েতে এবং কুয়েত ছেড়েছেন।

উল্লেখ্য, কুয়েতের মোট জনসংখ্যা ৪৮ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ৩৪ লাখই বিদেশি। ব্রিগেডিয়ার হামাদ রশিদ আল তাওয়ালা’র মতে, এর আগে সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিল। এর অধীনে অবৈধ শ্রমিক বা ব্যক্তিদের সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিতে বলা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কুয়েতে এখনও প্রায় এক লাখ ৩৫ হাজার অবৈধ অভিবাসী অবস্থান করছেন। তিনি আরো জানান, ২৬ হাজারের বেশি অবৈধ মানুষ এই সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়েছেন এবং তারা কুয়েত ছেড়ে চলে গেছেন। এপ্রিলে কুয়েত সরকার অবৈধ শ্রমিকদের স্ব স্ব দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা প্রকাশ করে তাদেরকে ফিরে যেতে উৎসাহী করে। এর অধীনে অবৈধ শ্রমিকদের শাস্তি ছাড়াই নিজের দেশে বিনাভাড়ায় ফেরত যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়।
কুয়েতের স্থানীয় জনসংখ্যার তিনগুনেরও বেশি বিদেশি অবস্থান করায় সেখানকার জনসংখ্যাতত্ত্বে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। ফলে সরকারের বিভিন্ন পরিষদ থেকে বিদেশি কর্মী সর্বনি¤œ পর্যায়ে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। ব্রিগেডিয়ার হামাদ রশিদ আল তাওয়ালা বলেন, এক্ষেত্রে অভিবাসীদের আবাসিক অনুমোদন, ব্যবসা, পর্যটন ও পারিবারিক সফরের ক্ষেত্রে ভিসার ফি বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে সরকার। জনসংখ্যাতত্ত্বে ভারসাম্য আনার জন্য একটি আইনের খসড়া জরুরি ভিত্তিতে পাঠানো হবে ন্যাশনাল এসেম্বলি বা পার্লামেন্টে। তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বে সব দেশের মধ্যে কুয়েতের ভিসা ফি কম। তাই পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করে নতুন রেসিডেন্সি ফি নির্ধারণ করা হবে। তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেন নি। তবে নতুন এই ফি এ বছর শেষ হয়ে যাওয়ার আগে কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *