যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ৪
নিউজ দর্পণ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে বন্দুকধারীদের হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিন কর্মকর্তাসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় শ্যারোলেট শহরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের শার্লটে ওয়ারেন্ট বাস্তবায়নের সময় তিনজন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং এই ঘটনায় অন্য আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অন্তত একজন সন্দেহভাজন হামলাকারীকে একটি ব্যারিকেডেড বাড়ির সামনের উঠানে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। গোলাগুলি ও বন্দুক হামলার এই ঘটনা প্রায় তিন ঘণ্টা স্থায়ী ছিল।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় দুই বন্দুকধারী জড়িত ছিল। আহত অফিসাররা ইউএস মার্শাল সার্ভিসের নেতৃত্বাধীন টাস্ক ফোর্সের অংশ।
বিবিসি বলছে, শার্লটের শহরতলীর রাস্তায় যখন বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয় তখন এসব পুলিশ কর্মকর্তা আগ্নেয়াস্ত্র রাখার দায়ে এক অপরাধীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছিলেন।
শার্লট-মেকলেনবার্গ পুলিশ প্রধান জনি জেনিংস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, অফিসাররা সামনের উঠানে একজন আততায়ীর দিকে গুলি চালায়, তারপর বাড়ির ভেতরে থেকে তাদের ওপর আরও গুলি চালানো হয়।
সোমবার শহরের পূর্বের একটি আবাসিক এলাকায় হামলা শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টারও বেশি সময় পরও গোলাগুলি চলছিল। পরে গালওয়ে ড্রাইভে পুলিশ বাড়িতে হামলা চালালে ঘটনাটি শেষ হয়।
সন্দেহভাজন ব্যক্তির সাথে বাড়ির ভেতরে থাকা আরও দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এদিকে মার্কিন মার্শাল সার্ভিস এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, অভিযানে তাদের একজন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
নর্থ ক্যারোলিনার গভর্নর রয় কুপার বলেছেন, নিহত দুই কর্মকর্তা অঙ্গরাজ্যের প্রাপ্তবয়স্ক সংশোধন বিভাগের সদস্য। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘আজকের নৃশংস হামলায় নিহত অফিসারদের পরিবার এবং সহকর্মীদের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা রয়েছে।’
এদিকে শহরের এক পুলিশ অফিসার আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ এখনও এই ঘটনায় হতাহত কোনো কর্মকর্তার নাম বা জড়িত সন্দেহভাজনদের নাম প্রকাশ করেনি।
অবশ্য অভিযান ও অবরোধের সময় আশপাশের বেশ কয়েকটি স্কুল লকডাউনে রাখা হয়েছিল। আশপাশের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা হয়েছিল এবং অ্যাম্বুলেন্স আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে কাছাকাছি রাস্তাগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী টাইলার উইলসন সিবিএস নিউজকে বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে কাজ করছিলেন। এসময় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পুলিশকে চিৎকার করতে শোনেন।
তিনি বলেন, ‘এর পরে, যা হয়েছে তা ছিল শুধুই বিশৃঙ্খলা। দুইপাশ থেকেই গোলাগুলি হচ্ছিল। আমাদের এখানে সোয়াত ছিল, এবং ইউএস মার্শালরা আমাদের বেডরুমে স্নাইপার বসিয়েছিল। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে সরাসরি গোলাগুলি হয়েছে।’