রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি: সরকারকে শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। সরকারি চাকরিতে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা এই স্মারকলিপি দেন।
রোববার (১৪ জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের কাছে স্মারক লিপি জমা দেন। বঙ্গভবন থেকে বের হয়ে প্রতিনিধি দলটি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানায়।
এর আগে আজ দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে ১২ সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ সদস্যরা তাদের ভেতরে নিয়ে যান। প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, সারজিস আলম, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, হাসিব আল ইসলাম, রিফাত রশিদ, হান্নান মাসুদ, সুমাইয়া আক্তার, আব্দুল কাদের, মেহেরুন্নেসা নিদ্রা, মো. মাহিন সরকার, আরিফ সোহেল ও আশিক।
এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রোববার বেলা ১১টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে গ্রন্থাগারের সামনে ছোট ছোট দল নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১২টায় তারা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে এ পদযাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রায় ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হন।
এ সময় মিছিলটি বঙ্গভবনের উদ্দেশে এগিয়ে যেতে থাকলে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষা ভবনের সামনে তাদের আটকানোর জন্য ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। পরে শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান। এরপর গণপদযাত্রা নিয়ে শিক্ষা ভবন এলাকা অতিক্রম করে সচিবালয়ের কাছে পৌঁছালে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সচিবালয় গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তাদের এ কর্মসূচি রাজধানীর জিরো পয়েন্টে পৌঁছালে পুলিশের ব্যারিকেড লক্ষ্য করা যায়। ব্যারিকেডের কারণে সামনে এগোতে না পেরে সড়কেই বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। একপর্যায়ে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গবভনের দিকে রওনা হন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে কোটা আন্দোলনের দাবি মেনে নিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন কোটা আন্দোলনকারীরা। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তারা বলেন, আমরা বলেছি কোটা বাতিল করে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। আমরা পদযাত্রা সফল করেছি। আমরা সরকার থেকে এখনও আশ্বাস পাচ্ছি না। কোটা সংস্কারের এখতিয়ার সরকারের। কিন্ত সরকার এড়িয়ে যাচ্ছে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছি, সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে সব প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে শুধু অনগ্রসরদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রেখে সংবিধান অনুসারে সংসদে আইন প্রণয়ন করতে হবে। আমরা আশা করি মহামান্য রাষ্ট্রপতি আইন প্রণয়ন করতে জরুরি পদক্ষেপ নেবেন।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, এক দফা দাবিতে আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছি। আমরা এই দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে চাই। আজকে আমাদের থামানো যায়নি। আমরা চাচ্ছি না কঠোর কর্মসূচিতে যেতে। আমরা চাই দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর আমরা সে অনুযায়ী পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবো।
তিনি আরও বলেন, ২৪ ঘণ্টা বাড়ানো হলো মামলা তুলে নিতে। না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি নিয়ে সবাইকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করবো।