রাজধানী

সৈয়দ ইব্রাহিম ও শাহজাহান ওমরসহ স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের অবিলম্বে বিচারের দাবি

নিউজ দর্পণ, ঢাকা: ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অস্তিত্ব রক্ষার্থে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক ও ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরসহ যারা স্বৈরাচার সরকারকে নানা ভাবে সহযোগিতা করেছে তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নাতনি এডভোকেট নুরতার আরা ঐশী।

আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) বেলা ১২ টায় রাজধানীর তেজকুনিপাড়ায় বিজয় স্মরণী টাওয়ারে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র পার্টি ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নুরতাজ আরা ঐশী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ৮ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হল- ১. দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ও নির্বাচনের পক্ষে স্বৈরাচারী সরকারের দোসরদের বিচার ও গ্রেফতার করতে হবে। ২. হাসিনার জুলুমের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের থানা ভিত্তিক তালিকা প্রস্তুতকরণ। জনস্বার্থে অতি গুরুত্বপূর্ণ টপ টেন ঘটনাকে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিকার প্রদানের ব্যবস্থা করা। ৩. হাসিনা কর্তৃক জুলুম নির্যাতনের বিষয়গুলো জাতীয়ভাবে প্রচার করার মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের ইমেজ বিল্ডিং করতে হবে। ৪. স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনের পূর্বে এক শতাংশ ভোটারদের সমর্থন নেয়ার যে বিধান রয়েছে তা বাতিল করতে হবে। ৫. ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প ও কলমিলতা বাজারের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দীর্ঘদিনের ঝুলিয়ে রাখা দাবির বিষয়টির উপর পদক্ষেপ নেয়া। ৬. সরকারি টাকা ছাড়াই সাধারণ বস্তিবাসী ও নিম্নবিত্ত মানুষের জীবন উন্নয়নের জন্য এনএসপিডিএল (NSPDL) এর গৃহীত পুনর্বাসন প্রকল্পসহ কমপক্ষে ১০০ টি প্রকল্প জরুরি ভিত্তিতে চালু করার উদ্যোগ নেয়া। ৭. চলমান এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের তালিকা করে তাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদা প্রদান করতে হবে এবং প্রতিটি পরিবার কে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন করতে হবে। এবং ৮. ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প এবং কলমিলতা বাজার বিষয়ে শহীদ পরিবারের চলমান আন্দোলন ও দাবিকে মেনে নেয়া।
নুরতাজ আরা ঐশী বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরযাবৎ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা জাতির ঘাড়ে বসে এমন কোন অপরাধ নাই যা করেন নাই। সাংবিধানিক সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে, গা শিউরে ওঠা আয়না ঘর তৈরী করা হয় ভিন্নমত ও বিরোধী দলকে নিঃশেষ করার জন্য। জাতি এক সময় চরম হতাশ হয়ে গিয়েছিল, ভেবেছিল এটাই নিয়তি, এদেশে জন্ম নেয়াটাই পাপ। একসময় স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সকল ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে আন্দোলন গড়ে উঠে। এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরো তীব্র হয়। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা রাষ্ট্রযন্ত্র কে ব্যবহার করে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, রুদ্র, দীপ্ত, বদিউজ্জামান, শাকিলসহ হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে এবং অজস্র মানুষকে আহত করে। অবশেষে সংগ্রামের মুখে ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আহবানে আপামর জনগণ, আন্দোলনরত রাজনৈতিক দল, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, রিক্সাওয়ালা, দিনমজুরসহ সকল শ্রেনী-পেশার মানুষ নেমে আসে রাজপথে। সারাবিশ্ব অবাক বিস্ময়ে দেখলো ইতিহাসের অতীতের সকল স্বৈরাচারকে ম্লান করে সবচেয়ে ভয়ংকর স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন। ভয় দেখাতে অভ্যস্ত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা নিজেই ভয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে।
কর্মসূচী: আগামী শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১১ টায় ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অস্তিত্ব রক্ষার্থে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী, জেনারেল ইব্রাহিম ও ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর সহ স্বৈরাচারী সরকারের সকল দোসরদের বিচার ও গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হইবে।
সংবাদ সম্মেলনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদেরের সন্তান আলহাজ মো. আব্দুর রহিম, হাফেজ শহিদুল্লাহ ইসলাম, নুরজাহান বেগম, আম্বিয়া খাতুন, বিপ্লবসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *