প্রধান সংবাদরাজনীতি

শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা পাকিস্তানীদের চেয়ে ভয়াবহ: মির্জা ফখরুল

নিউজ দর্পণ, ঢাকা: শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা পাকিস্তানীদের চেয়ে কোন অংশে কম নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবুদস সালাম মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ঘনিষ্ঠ সহচর ন্যাশনালিস্ট আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান যাদু মিয়ার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই সভার আয়োজন করে ভাসানী অনুসারী পরিষদ।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সোমবার একদিনে ছাত্রলীগ যা করেছেন তা পাকিস্তানীদের চেয়ে কোন অংশে কম? তারা হাসাপাতালে গিয়ে হামলা চালিয়েছে। স্বাধীনতার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানের ছাত্র সংগঠন এনএসএফ পৈশাচিক নির্যাতন করতো। বর্তমানেও আওয়ামী লীগ সরকারের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ সেটিই করছে। তারা অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে। অথচ শিশিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত। সুতরাং আজকে ঘৃণা এবং ক্ষোভের সঙ্গে বলতে হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ বর্বর হামলা চালিয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের অবস্থা ভয়াবহ। দেশে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র নেই। মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্র নির্বাসিত করেছে। দেশকে পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত করেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, শুধু ঢাকাতে নয় গোটা দেশে এই হামলা চালিয়েছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এখন তো সবার উচিত আন্দোলন করা। কার আমাদের সন্তানদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। এই সময়ে রুখে দাঁড়াতে না পারলে দেশ ও জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়া হয়ে গেছে। তার আমলা নির্ভর ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। আমি গতকাল সম্পূর্ণ ফ্যাসিবাদী দেখেছি। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও আমাদেরকে অধিকার নিয়ে লড়াই করতে হচ্ছে। কোটা ব্যবস্থা তো প্রধানমন্ত্রীই বাতিল করেছিলেন। আবারও আদালতকে ব্যবহার করে একটা ইস্যু বানিয়েছে। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। তবে একট কথা বলতে চাই, আমাদের সবাইকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এই সরকারকে আর সময় দেওয়া যাবেনা। তিনি বলেন, আমরা জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফেরত চাই। এটাই মূল সমস্যা। আমরা সুষ্ঠু ও জবাবদিহিমূলক সরকার চাই, ব্যাবস্থা চাই। কিন্তু সরকার একের পর এক ইস্যু তৈরি করে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেষ্টা করছে।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, মশিউর রহমান যাদু মিয়ার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিলো। তিনি আমার বাবার সহপাঠী ছিলেন। অনেকেই তাকে বিতর্কিত বলেন। কিন্তু আমি যা দেখেছি তা হলো বিএনপি গঠন করেছিলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন তখন তিনি একটা নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। সেসময় যে কয়েকজন রাজনীতিবিদ এসেছিলেন তাদের একজন মশিউর রহমান যাদু মিয়া।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ড. আবু ইউসুফ সেলিমের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *