পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম, মহাসংকটে নিম্ন আয়ের মানুষ
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: আধা সরকারি চাকরিজীবী জাহিদুল কবির বাজার করতে গিয়েছিলেন শেওড়াপাড়া কাচাঁ বাজারে। নিত্যপণ্যসহ সবজিনিসের দাম বৃদ্ধি দেখে তিনি বলেন এভাবে দাম বাড়তে থাকলে পরিবার নিয়ে আর ঢাকায় থাকা যাবে না। তিনি বলেন আমাদের বেতন না বাড়লেও সবজিনিসের দাম পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্যাস-বিদ্যুতসহ বাসা বাড়া বৃদ্ধি। এমনিতে পরিবার চালাতে হিমসিম খাচ্ছি। তার ওপর বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। তিনি বলেন পবিত্র রমজানে বিশ্বের সকল মুসলিম দেশে দ্রব্যমূল্য কমে আর বাংলাদেশে তা বাড়ে, এটি খুবই দু:খজনক।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো পদক্ষেপই কাজে আসছে না। মহা সংকটে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বাজারে সকল জিনিসের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও সবকিছুর দামই প্রায় বেড়েছে।
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরাও বাজার ঘুরে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছেন। কোন অবস্থাতেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না সিন্ডিকেট। আজ শুক্রবার নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে লেবু, শশা, ধনিয়া পাতা, টমেটোর দাম। বাজার ভেদে প্রতি ডজন লেবু বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৪০ টাকায়। মানভেদে শশার কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকা। দাম বাড়ার দৌড়ে আরও এগিয়েছে খেজুর। সব থেকে কম দামি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৫০০ টাকায়। ভালো মানের খেজুর ২৫০০ টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজানে চাহিদার শীর্ষে থাকা তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি দরে। সেই হিসেবে ছোট সাইজের একটি তরমুজ কমপক্ষে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। ইফতারী সামগ্রী প্রস্তুতে ব্যবহৃত বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।
এখন সবজির ভরা মৌসুম চলছে। এ ভরা মৌসুমে আলু জাত ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকায়। আর টমেটো বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকায়। বেড়েছে কাচা মরিচের দাম। প্রতিকেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আবহাওয়া খারাপ থাকায় গত সপ্তাহ থেকে সব ধরণের সবজির আমদানি কম। তাই সবজির বাজার চড়া।
এদিকে বাজারে আমন ধানের চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও বিআর-২৮, পাইজাম, গুটি ও মিনিকেট চালের দাম গত তিনদিনের ব্যবধানে কেজিতে দুই থেকে ৫টাকা টাকা করে বেড়েছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এর আগে ভোটের পরপর চালের দাম কেজিতে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল। এরপর কিছুটা কমে মাস দেড়েক স্থিতিশীল ছিলো। এখন আবার মিল পর্যায়ে প্রতি বস্তা চালের দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। পাইকারি বিক্রেতাদের দাবি, তাদের কেনা দাম বেশি। অন্যদিকে মিলারদের দাবি, উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় ধানের দাম বেড়েছে।
ওদিকে গত সোমবার সরকার অতি সাধারণ মানের খেজুরের দাম প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা এবং দেশে বহুল ব্যবহৃত জাইদি খেজুরের দাম প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও তার প্রভাব দেখা যায়নি। বেঁধে দেয়া দামে কেউ বিক্রি করছেন না এসব খেজুর। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি জাইদি খেজুর ২৮০ থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অতি সাধারণ ও নিম্নমানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। সাধারণ মানের খেজুর প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে ভালো মানের খেজুর এক হাজার থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে।