তদারকির অভাবে বাড়ছে অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানি
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: পোশাক কারখানা, গোডাউন, কল-কারখানা, হাসপাতাল ও বস্তি থেকে শুরু করে সুউচ্চ ভবন কোনো কিছুই আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাদ যাচ্ছে না। ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, ভবন বা স্থাপনা তৈরিতে মানা হচ্ছে না ‘ইমারত নির্মাণ বিধিমালা’। সঠিক তদারকির অভাব ও অপরিকল্পিত নগরায়ণে বাড়ছে অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানি।
ক্রমাগত বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড হলেও যেন দেখার কেউ নেই। বছরজুড়ে অগ্নিকাণ্ড যেন এ দেশের জন্য স্বাভাবিক ঘটনা। দেশে যেসব আগুনের ঘটনা ঘটে এর অধিকাংশই বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে। অনেক ক্ষেত্রে দেখে গেছে, একই ভবনে রয়েছে হোটেল, রেস্তোরাঁ ও অন্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
নগরায়ণের সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের মিশ্র ( একই ভবনে হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান) ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, বিল্ডিং কোডের বিধি লঙ্ঘন এবং অগ্নিনিরাপত্তা সচেতনতার অভাবে সর্বত্র লুকিয়ে আছে অগ্নিঝুঁকি। এছাড়া অগ্নিদুর্ঘটনার প্রতিরোধে যথেষ্ট শিক্ষার ও আধুনিক প্রশিক্ষণের অভাব। পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার অপ্রতুলতায় সহজে ছড়িয়ে পড়ছে আগুন। হুড়োহুড়ি ও আতঙ্কে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।
তবে, অগ্নিদুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে মানুষের অজ্ঞতা ও অসচেতনতাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত বাসাবাড়িতে বেশিরভাগ অগ্নিকাণ্ড হয় ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার, শর্টসার্কিট ও এসির কম্প্রেসর বা জ্বলন্ত সিগারেটের উচ্ছিষ্টাংশ থেকে। ঢাকা তথা দেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামগঞ্জে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের কারণেই প্রতিনিয়ত ঘটছে অগ্নিকাণ্ড।
‘মানুষের অজ্ঞতা ও অসচেতনতায় গ্যাস সিলিন্ডার, শর্টসার্কিট ও এসি কমপ্রেসর বা জ্বলন্ত সিগারেটের উচ্ছিষ্টাংশ থেকে আগুনের ঘটনা বেশি ঘটে। দেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামগঞ্জে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে প্রতিনিয়ত অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে। আমরা কিছু বিষয়ে অবহেলা করতে পারি না। আমাদের আরও সচেতন হওয়া উচিত।’— ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার
সর্বশেষ গত ২৪ মার্চ বিকেলে রাজধানীর বনানীতে টিঅ্যান্ডটি কলোনির গোডাউন বস্তিতে আগুন লেগে দুই শতাধিক ঘর পুড়েছে। এর আগে বেইলি রোডের আগুনে ৪৬ জন এবং গাজীপুরের কোনাবাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজে প্রাণ গেছে ১৬ জনের। এ ঘটনায় এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছে অনেকে।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে সারাদেশে পাঁচ হাজার ৩৭২টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে গড়ে প্রতিদিন আগুন লাগার ঘটনা ৮৯টি। চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে দেশে আরও পাঁচ শতাধিক অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।
এসময়ের মধ্যে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম ২০১০ সালের পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, সাভারের আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় ২০১২ সালের তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডে অগ্নিকাণ্ড, ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটে এবং ১৫ মার্চ রাতে মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে লাগা অগ্নিকাণ্ড, ২০১৯ সালে রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ওয়াহেদ ম্যানশনে, ২০২১ সালে মগবাজারের ওয়্যারলেস গেটের বিস্ফোরণ এবং ২০২২ সালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ। এসব ঘটনা আজও মানুষের মনে নাড়া দেয়।
এছাড়া ২০২৩ সালেই দেশব্যাপী ঘটে যাওয়া একাধিক বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ব্যাপকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ২০২৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি গুলশানের মোশারফ জাকের স্কাইলাইন ভবনে লাগা আগুন, ২৬ ফেব্রুয়ারি বনানীর কড়াইল বস্তিতে অগ্নিদুর্ঘটনা, ৫ মার্চ সায়েন্সল্যাব এলাকায় বিস্ফোরণ, গুলিস্তান বিস্ফোরণের মাত্র দুদিন পরে ৭ মার্চ সিদ্দিকবাজারে আগুন এবং ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। এর ঠিক ১১ দিন পরই ১৫ এপ্রিল আগুন লাগে রাজধানীর অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক ভবন নিউমার্কেটে এবং আগুনে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে যায়।
চলতি বছর (২০২৪ ) ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর অভিজাত এলাকা বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লাগে। আগুনে ৪৬ জনের প্রাণহানি হয়। এতে প্রায় ২০০ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়। প্রতিটি বিস্ফোরণের পরপরই পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক দপ্তর, সিআইডিসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং প্রতিবারই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু শেষ হয় না তদন্ত ও মামলার কার্যক্রম।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন অনুসারে, ঢাকা শহরে প্রতি ৭ লাখ ৪২ হাজার ১৭০ জন অধিবাসীর জন্য মাত্র একটি ফায়ার স্টেশন আছে। অন্যদিকে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে অনুমোদিত জনবলের মাত্র ৪০ শতাংশ বর্তমানে নিয়োজিত। অর্থাৎ ফায়ার সার্ভিসের সংখ্যা যেমন অপ্রতুল, তেমনি তাদের জনবল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিরও স্বল্পতা রয়েছে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষও অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন নয়।
অগ্নি দুর্ঘটনার বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদরদপ্তরের মেডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার বলেন, চলতি বছর বেইলি রোড, গাজীপুরের কোনাবাড়ি, পুরান ঢাকা, কড়াইল বস্তি, গজারিয়ায় টিকে গ্রুপের প্লাইবোর্ড তৈরির কারখানা ও নারায়ণগঞ্জের গাউছিয়ার কাঁচাবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া সারাদেশে বহু আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
শাহজাহান শিকদার বলেন, মানুষের অজ্ঞতা ও অসচেতনতার কারণ গ্যাস সিলিন্ডার, শর্টসার্কিট ও এসির কমপ্রেসর বা জ্বলন্ত সিগারেটের উচ্ছিষ্টাংশ থেকে আগুনের ঘটনা বেশি ঘটেছে। ঢাকা তথা দেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামগঞ্জে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে প্রতিনিয়ত অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা কিছু বিষয়ে অবহেলা করতে পারি না। ভবন তৈরির সময় সব ব্যবস্থা থাকলেও আগুন নির্বাপণের বিষয়ে সচেতন হই না। আগুন লাগার পর নজরদারি বাড়াই। আবার সাধারণ মানুষের মাঝে আগুন নেভানোর প্রাথমিক ধারণাও কম।
‘অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল অবকাঠামোয় হাজার হাজার স্থাপনা ভয়াবহ অগ্নিঝুঁকিতে। আমরা দেখি, প্রতিটি অগ্নিকাণ্ড গাফিলতি ও তদারকির অভাব উন্মোচিত হয়। কিন্তু সেই আলোচনা হয় অন্ধের হাতি দেখার মতো। কোনো একটি বা দুটির বিষয়ে আলোচনা হলেও সামগ্রিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রশ্নটি বাইরেই থাকে।’— বাপার সহ-সভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিব
ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, দেশের পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলোতে প্রশিক্ষিত জনবল এবং প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কৌশল শিখিয়েছে। কিন্তু সব প্রতিষ্ঠান কী সমানভাবে তা করছে? সে ক্ষেত্রে বলা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আগুনের ঝুঁকি যেমন আছে তেমনি আগুন নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা নেই।
এ বিষয়ে পরিবেশবিদ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমাতুল করিম বলেন, আমরা অগ্নিকাণ্ডের পরে একে-অপরের দোষ খুঁজি। এ বিষয়ে আলোচনা করি। কিন্তু এ বিষয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক সংস্থার সমন্বয়ে তদারকি বিশেষ জরুরি। সেটা মাথায় রাখি না। বিশেষ করে ভবন মালিকরা অর্থ বাঁচানোর জন্য অনেক সময় গড়িমসি করেন। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করেন। তাই আগুনের হাত থেকে বাঁচতে বিল্ডিং কোডের বিষয়ে আপস না করার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রতিটি বাণিজ্যিক ভবনে ইমার্জেন্সি এক্সিট থাকতে হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সম্পর্কে মৌলিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং যেসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ তা চিহ্নিতকরণ করে মালিকদের নোটিশ দিতে হবে। এক্ষেত্রে মালিকদের সতর্ক করে দিতে হবে। তবুও যদি কোনো ভবন মালিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেন সেক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে নতুন আইন করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহ-সভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, আমরা জানি— ভবন নির্মাণে বিভিন্ন ধাপে ছয়টি কর্তৃপক্ষ যুক্ত (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশন, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়)। এসব সেবা সংস্থা ও কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে ভবনের কার্যক্রম চলার কথা থাকলেও কার্যত সেই নিয়ম মানা হয় না। বিদ্যমান বিভিন্ন আইনের অসামঞ্জস্যতার কারণেও নগরীর অগ্নিঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সমন্বয়হীনতার ও ব্যত্যয়ের আবর্তে বন্দি।
তিনি বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল অবকাঠামোয় হাজার হাজার স্থাপনা ভয়াবহ অগ্নিঝুঁকিতে। ফায়ার সার্ভিস ২০২৩ সালে দেশের ৫ হাজার ৩৭৪টি ভবন পরিদর্শন করে ১ হাজার ৬৯৪টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ও ৪২৪টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে। আমরা দেখি, প্রতিটি অগ্নিকাণ্ড গাফিলতি ও তদারকির অভাব উন্মোচিত হয়। কিন্তু সেই আলোচনা হয় অন্ধের হাতি দেখার মতো। কোনো একটি বা দুটি দিকে আলোচনা হলেও সামগ্রিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রশ্নটি বাইরেই থাকে।
ছয়টি সংস্থার মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। সংস্থার কাজ হলো অগ্নিকাণ্ড রোধে জনসচেতনতা এবং অগ্নিকাণ্ড ঘটলে ক্ষতিগ্রস্তদের জানমাল রক্ষা ও উদ্ধারে কাজ করা ফায়ার বিষয়ক লাইসেন্স ও ছাড়পত্র দেওযা, নবায়ন করা। সঠিক নিয়মে ফায়ার ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে কি না দেখভাল করা। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংস্থাটির সক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইমারত ও জনসংখ্যা।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ বলেন, ঢাকা শহরে বেশিরভাগ অগ্নিকাণ্ড ইমারতজনিত কারণে ঘটে। ইমারত তৈরিতে প্রথমত রাজউকের অনুমতি লাগে। এ অনুমতি কারা দেয় এবং কারা এটি মনিটরিং করে এগুলো চিহ্নিত হওয়া প্রয়োজন।
কৃষ্ণা দেবনাথ বলেন, নিমতলী থেকে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে বেআইনি কাযর্কলাপের কারণে। তাই বেআইনি কার্যকলাপে দণ্ড হবে অর্থদণ্ড ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। সেই মামলাগুলো করুন। তিনি বলেন, একটা বিল্ডিংয়ের কনস্ট্রাকশন অনুমতি ছাড়া কিছু করবে এত বড় সাহস হয় কি করে? সিঁড়ির নিচে গ্যাস সিলিন্ডার রেখে রেস্টুরেন্ট দুর্ঘটনা ঘটে। কেন তারা নোটিশ টানিয়ে দেন না। যেই নোটিশটি দেখে আমরা সেখানে যাবো না। আমরা যদি না শুনি না দেখি তা হলে তো সেখানে যাবো।
আপিল বিভাগের এ বিচারক আরও বলেন, আমি যখন দেখবো যে লাল দাগ, বড় সাইনবোর্ড অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই সেখানে যাবো না। এখানে বেআইনিভাবে যারা ইমারত গড়েছেন, নকশা করেছেন, সেটার মনিটরিং নেই, তাদের চিহ্নিত করতে হবে।