চীন কিছু দেয়নি, ভারতের সঙ্গে গোলামি চুক্তি বলা মানসিক অসুস্থতা: প্রধানমন্ত্রী
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: চীন ও ভারত সফর নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনাকে ‘মানসিক অসুস্থতা’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, চীন আমাদের কিছুই দেয় নাই, ভারতের সঙ্গে আমরা গোলামি চুক্তি স্বাক্ষর করে এসেছি; কিছু মানুষের মুখ থেকে এগুলো আমাদেরকে নিয়মিত শুনতে হচ্ছে। এগুলো হলো সম্পূর্ণ মানসিক অসুস্থতা।
রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন সফরে ২১টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি হয়েছে। আমি জানি না এরপরও যারা সমালোচনা করছেন, তারা জেনে বুঝে করছেন কি না। কিছুদিন আগেও ভারত সফরে আমরা দেশ বিক্রির চুক্তি করে আসছি, এমনটা বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন আমি এসবকে খুব বেশি একটা গুরুত্ব দিই না। কারণ, আমি বাংলাদেশে আসার পর প্রতিটি ক্ষেত্রেই নেগেটিভ কথা শুনে আসছি। এতসব গুজব আমাকে নিয়ে হয়েছে, যেগুলো আমি শুনে আসছি, এসব নিয়ে আর কিছুই বলার নেই। যারা বলছে বলুক, তাদেরকে বলতে দিন।
কোটা আন্দোলনকারী এবং দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? তাদের নাতিপুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে? এটা আমার দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন। তাদের অপরাধটা কী? নিজের জীবন বাজি রেখে, নিজের পরিবার সব ফেলে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে, দিনরাত খেয়ে না খেয়ে, কাদামাটি পেরিয়ে, ঝড়বৃষ্টি সব মোকাবিলা করে যুদ্ধ করে এ দেশে বিজয় এনে দিয়েছিল। বিজয় এনে দিয়েছিল বলেই তো আজ সবাই উচ্চপদে আসীন। আজ গলা বাড়িয়ে কথা বলতে পারছে। তা না হলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে থাকতে হতো।
তিনি বলেন, আগে বিদেশে যেতে হলে ভিসা নিতে হতো করাচিতে গিয়ে। কারণ তখন করাচি ছিল রাজধানী। এরপর রাজধানী হলো ইসলামাবাদ। তখন বিদেশে যেতে আন্তর্জাতিক কোনো ফ্লাইট ঢাকা থেকে চলত না। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নিতে হতো হয় দিল্লি থেকে, নয় করাচি থেকে। ঢাকা থেকে কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট যেত না। এটা আমার নিজের অভিজ্ঞতা।
এর আগে গত ৮ জুলাই বেইজিং সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেইজিংয়ে অবস্থানকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গেও প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন।
সফরের শেষ দিন ১০ জুলাই বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হয়। এরপর দুই দেশ ২১টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে এবং সাতটি প্রকল্পের ঘোষণা দেয়।