সিলেটে করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট দেয়া সেই চিকিৎসক গ্রেফতার
নিউজ দর্পণ, ঢাকা : সিলেটে বিদেশগামীদের করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদানকারী এক চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৯)। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা মেলায় তাকে ৪ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়া ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তাকে।আজ রোববার সিলেটের মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস সেন্টারের চিকিৎসক ডা. এ এইচ এম শাহ আলমকে এ সাজা দেয়া হয়।
ডা. শাহ আলমের রেজিস্ট্রেশন নম্বর থেকে জানা যায়, তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সনদপ্রাপ্ত একজন মেডিকেল চিকিৎসক। অথচ করোনা সার্টিফিকেটের প্যাডে নিজেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ডাক্তারের পরিচয় দিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, নিজেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ডাক্তারের পরিচয় দিয়ে বিদেশগামীদের কাছ থেকে বড় অংকের টাকা আদায় করে নন-কোভিড প্রত্যয়নপত্র দিচ্ছিলেন এই চিকিৎসক। প্রতিটি ভুয়া সার্টিফিকেট বাবদ ৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। ওই সার্টিফিকেটে ডা. শাহ আলম উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে উপসর্গহীন রোগীদের করোনা পরীক্ষার সুযোগ নেই।
এছাড়া নিজেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক বলেও উল্লেখ করেছেন। যদিও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপ-পরিচালক হিমাংশু লাল রায় জানিয়েছেন, এ নামে কোনো চিকিৎসক তাদের ওখানে নেই। প্যাডে নিজেকে ওসমানী মেডিকেলের চিকিৎসক লিখে থাকলে তিনি রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
এছাড়া ডা. শাহ আলমের বিরুদ্ধে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ, তিনি নিজেও একজন করোনা আক্রান্ত রোগী। এরপরও চেম্বারে বসে রোগী দেখেছেন।
ডা. শাহ আলম থেকে করোনা ভুয়া সার্টিফিকেট নেয়া ভুক্তোভোগী প্রবাসী দম্পতির ভাতিজা আনোয়ার হোসেন জানান, ১০ জুলাই সন্ধ্যায় তিনি মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেসে গেলে তার চাচা-চাচীর কাউকেই পর্যবেক্ষণ না করেই নন-কোভিড সার্টিফিকেট দেন ডা. শাহ আলম।
তিনি জানান, এই সার্টিফিকেটে কাজ না হওয়ায় ঢাকার একটি বেসরকারি পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে নমুনা দিয়ে পরীক্ষা শেষে সনদ নিয়ে ১২ জুলাই এমিরেটস এয়ারলাইন্সে করে যুক্তরাষ্ট্রে যান এই দম্পতি। এমন সব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে চিকিৎসক শাহ আলম বলেছেন, আমি ভুল করেছি। এমন ভুল আর হবে না। এমন নন-কোভিড সার্টিফিকেট দেয়া ঠিক হয়নি আমার। আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
এ বিষয়ে মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসের সিলেটের মহাব্যবস্থাপক এম এ মতিন মাসুক বলেন, আমাদের বিপনন কর্মকর্তারা ডা. এ এইচ এম শাহ আলমকে ওসমানী মেডিকেল কলেজে কাজ করতে দেখেছেন। তাই তার কাগজপত্র আর যাচাই করা হয়নি। আর ১৬ জুলাই করোনা সংক্রমনের কথা অবগত হলেই এই চিকিৎসককে চেম্বারে আসতে নিষেধ করে দিই আমরা।