বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিএনপির ত্রাণ কমিটি গঠন
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিএনপির ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
মির্জা ফখরুল জানান, বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় স্থায়ী কমিটির সম্মানিত সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে আহ্বায়ক করে নি¤েœ বর্ণিত নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে একটি জাতীয় ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা অবিলম্বে কাজ শুরু করবেন। দুর্গত এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপি, অঙ্গ-সংগঠনের সকল নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, একদিকে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে অন্যদিকে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমাগত বাংলাদেশের মানুষ চরম দুর্ভোগে। একদিকে করোনা মোকাবেলায় সরকারের চরম ব্যথ্যতা মানুষের জীবন ও জীবিকাকে বিপন্ন করে তুলেছে অন্যদিকে ভারতের উজান থেকে বন্যার পানি নেমে আসাতে মানুষের সম্পদ, বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে যাওয়া, গোবাদী পুশু মৃত্যু, ফসলহানি দেশের মানুষ সীমাহীন কষ্ট ও অর্থনৈতিক অসহায়ত্বের মধ্যে ফেলেছে। ভারত অভিন্ন নদী গুলোর সকল বাঁধ ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানি, বাংলাদেশে ব্রক্ষ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা, মহানন্দ, পদ্মা, তিস্তা ও ধরলা নদীর অববাহিকায় ৩৪টি জেলা ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি জেলা ১ মাসের মধ্যে ২/৩ বার বন্যার পানি উজান থেকে এসে বাড়ি-ঘর, ফসলের ক্ষেত ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে যে অভিন্ন নদী প্রায় ১৫৪টি একমাত্র পদ্মার ফারাক্কা বাঁধ ব্যতীত কোনটারই কোন পানি বণ্টন চুক্তি ভারতের অনীহার কারনে সম্পূণ হয়নি। তিস্তার চুক্তির কথা ফলাও এই সরকার প্রচার করলেও গত এক দশকে কোন চুক্তিই করতে সক্ষম হয়নি অথচ একের পর এক ট্রানজিট, বন্দর ব্যবহার, বিদ্যুৎ ক্রয়সহ অসংখ্য অসমচুক্তি স্বাক্ষর করেছে। অন্যদিকে সীমান্তে প্রায় প্রতিদিন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশীদের গুলি করে হত্যা করছে। সে ব্যাপারেও সরকার কোন কার্যকরী প্রতিবাদ জানাতে সাহস পায়নি। এই সরকারের নতজানু পরারাষ্ট্রনীতি কারনে প্রায় প্রতি বছর বাংলাদেশের নদী অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষেরা এই বন্যায় আক্রান্ত হয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। ভারত বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন প্রায় নিষ্ক্রীয় হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, করোনা মোকাবেলায় সরকার যেমন একবারেই ব্যার্থ, চরম উদাসীনতা, অবহেলা ও দূর্নীতির কারনে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, ঠিক তেমনি বন্যার বিষয়েও সরকারের নীরবতা, নিষ্ক্রীয়তা, মানুষকে আতংক গ্রস্থ করেছে। একজন মন্ত্রীতো বলেই ফেললেন ‘বন্যার বিষয় এতটুকুও চিন্তিত নই’। ভালো কথা। এই যে প্রতিদিন গণমাধ্যমে আসছে আমরা বন্যার্ত মানুষের আহাজারি, তার অসহায়ত্বের কথা, সহায় সম্বল হারিয়ে সড়কের অথবা বাঁধের ওপরে আশ্রয় নেওয়া, শিশু-সন্তান, বৃদ্ধ পিতা-মাতা নিয়ে খোলা আকাশের নীচে অভুক্ত থাকা – এই বিষয়গুলো তাদের চিন্তিত করে না। তারা তো ধরা ছোয়ার বাইরে। জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতা করতে হয় না। করোনা-বন্যা এই সব দুর্যোগ এলে বরঞ্চ তার খুশি হয় – দূর্নীতির নতুন সুযোগ সৃষ্টি হলো বলে।
আমরা এই অনির্বাচিত সরকারের এই অবহেলা উদাসীনতার এবং নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে বন্যা প্রয়োজনীয় ত্রাণের যথাযথ ব্যবস্থার গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি। বিএনপি সব সময়ই যে কোন দূর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ায় Ñ সর্বশেষ করোনা দূর্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি।