পরিস্থিতির উন্নতি না হলে উপনির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: চলমান করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে উপনির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি অংশ নেবে না। এর আগে দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠক করে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে আজকে অনুষ্ঠিত বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচন বর্জন করছে বিএনপি। শুধু এ উপনির্বাচনই নয়; করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে দলটি সামনের সব উপনির্বাচনই বর্জন করবে বলে দলের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে।
গত ২৯ মার্চ যশোর-৬ এবং বগুড়া ১ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ভোট গ্রহণের সপ্তাহখানেক আগে তা স্থগিত করা হয়। আসন দুটির মধ্যে বগুড়ার আসন শূন্য হয় ১৮ জানুয়ারি এবং যশোরের আসন শূন্য হয় ২১ জানুয়ারি। ইতোমধ্যে আসন দুটির উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের ৯০ দিন পার হয়েছে। সংবিধান প্রদত্ত সিইসির হাতে থাকা পরবর্তী ৯০ দিন পার হবে যথাক্রমে ১৫ ও ১৮ জুলাই।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে, প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে, যখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হচ্ছে, সেই সময় ভোট গ্রহণযোগ্য নয়।
গত ১৮ জানুয়ারি সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে বগুড়া-১ এবং ২১ জানুয়ারি ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুতে যশোর-৬ আসন শূন্য হয়। বগুড়া-১ আসনে একেএম আহসানুল তৈয়ব জাকির ও যশোর-৬ আসনে আবুল হোসেন আজাদকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে এসব প্রার্থী উপনির্বাচন বর্জন করেছে। এ ছাড়াও শূন্য আসন হচ্ছে ঢাকা-৫, ঢাকা-১৮, সিরাজগঞ্জ-১ এবং পাবনা-৪। এসব আসনে সামনে উপনির্বাচন হবে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, বিগত সময়ে স্বাভাবিক পরিবেশ-পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এখন ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি চলছে। এর উন্নতি না হলে আমাদের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে তো মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারি না। দেশের জনগণও চায় না এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাই।
গত ২ এপ্রিল পাবনা-৪ আসনের (আটঘড়িয়া-ঈশ্বরদী) সংসদ সদস্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত ৬ মে ঢাকা-৫ আসনের (ডেমরা-দনিয়া-মাতুয়াইল) সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান মোল্লা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান, ১৩ জুন সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মারা যান। সর্বশেষ মারা যান গত ৯ জুলাই রাতে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য সাহারা খাতুন।
বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই নির্বাচনে থাকাটা বিএনপির জন্য ঠিক হবে না। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার। করোনার কারণে দেশের পুরো ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির। এই অবস্থায় দলীয় নেতাকর্মীদের প্রশ্ন কোনটা জরুরি জীবন, নাকি নির্বাচন? এ রকম পরিস্থিতে নির্বাচন করা সম্ভব নয়।