পদ্মা ও আত্রাই পানি বিপদসীমার উপরে: পানিবন্দি লাখ মানুষ
নিউজ দর্পণ ডেস্ক: ফরিদপুরে পদ্মা নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে জেলা সদর থেকে চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলায় যাওয়ার সড়কটির কয়েক স্থানে পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়াও ওই সড়কের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে। বন্ধ রয়েছে ভারী যান চলাল।
এদিকে নওগাঁ জেলার আত্রাই নদীর ৬টি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে আত্রাই ও মান্দা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আত্রাই নদীর পানি কমে বর্তমানে ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ছানাউল্লাহ জানিয়েছেন ,আত্রাই উপজেলার জাত আমরুল এবং বৈঠাখালি নামকস্থানে বাঁধ ভেঙ্গে ৫টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। উপদ্রুত ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্রামে বন্যার পানি ঢুকেছে। এসব গ্রামের প্রায় ১৪ হাজার পারিবারের ৫৬ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে ৩শ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ হিসেবে শুকনা খাবার এবং চাল বিতরণ করা হয়েছে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল হালিম জানিয়েছেন ,আত্রাই নদীর ডান তীরে ৬টি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় উপজেলার কশব ও বিষ্ণপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে ২৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়েছেন। এদের অনেকেই নদীর বাঁধসহ বিভিন্ন উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। এ দু’টি ইউনিয়নেন প্রায় ৫ হাজারেরও বেশীূ পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ উপজেলায় তাৎক্ষণিকভাবে ৫শ পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবার এবং চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, জেলার ৩০টি ইউনিয়নে ২০ হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। তাদের জন্য ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে সরকারি খাদ্য সহায়তা বিতরণ। এছাড়া জেলা সদর থেকে চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলার প্রধান সড়কটি চলাচলের উপযোগী করতে সড়ক বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদিও ওই সড়কে বেশকিছু স্থান পানিতে নিমজ্জিত।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, বর্তমানে পদ্মার পানি গোয়ালন্দ পয়েন্টে ৯.৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার উপরে। এর ফলে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে মধুমতির নদীর আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন।
সদরপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার পূরবী গোলদার জানান, সরকারিভাবে ২৯ মেট্রিক টন চাল ও ৫০ হাজার টাকা বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তিনি জানান, এ উপজেলার বেশ কয়েকটি সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
এদিক নদী ভাঙনের কথা জানিয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলার চেয়ারম্যান একেএম জাহিদ হাসান বলেন, মধুমতি নদীতে এই মুহূর্তে প্রচুর পরিমাণে ভাঙন শুরু হয়েছে। নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। তিনি জানান, স্থানীয় এমপির সহায়তায় জরুরিভাবে ভাঙন রোধে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। তবে এই ভাঙন কবলিত এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
ফরিদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম নকিবুল বারী জানান, বন্যার পানি সড়কের চারপাশে থাকায় বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি সড়কটিকে রক্ষা করতে। তবে এই মুহূর্তে ভারী যান চলাচল করা যাবে না।