নৌবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেলেন শাহীন ইকবাল

নিউজ দর্পণ,ঢাকা : বাংলাদেশ নৌবাহিনীর রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবালকে তিন বছরের জন্য নৌবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আজ শনিবার বিকালে জারি হওয়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব শাহ্ আবদুল আলীম খান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, আগামী ২৫ জুলাই ২০২০ থেকে ভাইস এডমিরাল পদে পদোন্নতি প্রদান পূর্বক মোহাম্মদ শাহীন ইকবালকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আগামী ২৪ জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত তিন বছরের বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান হিসেবে তাকে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

একই দিন পৃথক প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আবু মুজাফফর মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব চৌধুরীকে নৌবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হয়েছে।

গত সাত মাস ধরে নৌ সদরে সহকারী নৌ প্রধান (অপারেশান্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা শাহীন ইকবাল নৌবাহিনী প্রধান পদে অ্যাডমিরাল আবু মোজাফফর মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন।

আবু মোজাফফর মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব চৌধুরী ২৫ জুলাই চাকরির মেয়াদ পূর্ণ করে অবসর প্রস্তুতি ছুটিতে (এলপিআর) যাচ্ছেন বলে আলাদা এক আদেশের জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

১৯৮০ সালে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে নৌবাহিনীতে যোগ দেওয়া শাহীন ইকবাল ১৯৮২ সালের ১ ডিসেম্বর এক্সিকিউটিভ শাখায় কমিশন পান।

নৌবাহিনীতে দীর্ঘ চার দশকের কর্মজীবনে শাহীন ইকবাল ফ্রিগেটসহ সব শ্রেণীর যুদ্ধজাহাজ এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটির অধিনায়কত্ব করেছেন। বিএনএস তিতুমীর এবং স্কুল অব মেরিটাইম ওয়ারফেয়ার অ্যান্ড ট্যাকটিকসের প্রধান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন শাহীন ইকবাল। কমোডর হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি খুলনা নৌ অঞ্চলের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। পরে পান চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের নেতৃত্ব।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে তিনি নৌ গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক, সদরদপ্তরের নেভাল অপারেশনস বিভাগের পরিচালক এবং সহকারী নৌ প্রধান (পারসোনেল) পদেও দায়িত্ব পালন করেন। নৌবাহিনীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিচারক ও বিশ্লেষক দলের সঙ্গে কাজ করেন মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল। ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নেও তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল স্টাফ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করা শাহীন ইকবাল ১৯৯৭ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইরাকে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। যুক্তরাষ্ট্রে মেরিটাইম কম্পোনেন্ট কমান্ডার ফ্ল্যাগ অফিসার্স কোর্স, ইন্টারন্যাশনাল সারফেস ওয়ারফেয়ার কোর্স, ভারতে এন্টি সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার কোর্স এবং মিরপুর ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ থেকে এনডিসি কোর্স করা এই কর্মকর্তা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণে অংশ নেন।

চাকরি জীবনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, ভারত, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতারসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে সাফল্য ও পেশাদারিত্বের জন্য নৌবাহিনীর সর্বোচ্চ পদক (এনবিপি) এবং নৌ উৎকর্ষ পদকে (এনইউপি) ভূষিত হন রিয়ার এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল। তার স্ত্রী মনিরা রওশন ইকবাল শিক্ষকতায় যুক্ত। তাদের একমাত্র সন্তান মুনতাসির মামুন কাজ ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ প্রভাষক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *