তিনদিন চিড়া-মুড়ি খেয়ে আছে সামিনার পরিবার: কপালে জোটেনি সরকারি সহায়তা
নিউজ দর্পণ, কুড়িগ্রাম: উপর্যুপুরি দুই দফা বন্যা। প্রথম দফার ধকল না কাটতেই দ্বিতীয় দফার বন্যা। ফলে ২০দিন ধরে বাড়িছাড়া কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার ধরলা নদী পাড়ের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের জগমোহনের চর গ্রামের বানভাসি গৃহবধূ সামিনা বেগম। প্রথমে আশ্রয় নিয়েছিলেন কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়কের পাশে। নদীতে পানি কমায় বাড়ির পাশে একটু টুকরো উঁচু ভিটা জেগে উঠেছে। বুধবার বিকেলে সেখানে এসে ঠাঁই নিয়েছেন। বাড়িতে এখনও বুক সমান পানি। দিনমজুর স্বামীর হাতে প্রায় ৫ মাস ধরে কোন কাজ নেই। তাই কোন কিছু কেনার ক্ষমতা এখন নেই বললেই চলে।
গত তিন দিন চিড়া-মুড়ি খেয়েছেন সামিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু অবুঝ ৯ বছরের মেয়ে আলবিনা আর ৭ বছরের ছেলে সাইদুল আর মানতে চাইছে না। ক্ষুধার জ্বালায় তারা ভাত চায়। শেষ পর্যন্ত ফুফু মরিয়ম বেওয়ার বাড়ি থেকে ৫ কেজি চাল ধার করে বৃহস্পতিবার সকালে ভাত রেঁধে আর পটল ভাজি করে স্বামী ও দু’সন্তানসহ নিজে খেয়েছেন সামিনা বেগম।
তার স্বামী আল আমিন জানান, বাড়িভিটা বলতে ৯ শতাংশ জমি ছিল। ধরলার ভাঙনে সেই ভিটাটুকু বিলীন হয়ে গেছে। এখন নদী পাড়ে অন্যের জমিতে ঘর তুলে আছেন। দিনমজুরী করে সংসার চালান। সেই কাজও প্রায় ৫ মাস ধরে বন্ধ। এখন মাঝে মাঝে মাছ ধরেন। পাশাপাশি মাসে হাজারে ১০০ টাকা সুদে ২০ হাজার টাকা ধার করেছেন ৩ মাস আগে। কাজ করে শোধ করবেন বলে।
তিনি বলেন, ঋণের সেই টাকা এতোদিন ভেঙে খেয়েছি। সরকারি কোন ধরণের সহায়তা কপালে জোটেনি।
ওই উঁচু ভিটায় আল আমিনের মতো কাশেম আলীও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন। তারও কমবেশি একই রকম অবস্থা। শুধু তাদেরই নয়, জেলার ৯ উপজেলার ৫৬ ইউনিয়নের ৪৭৫ গ্রামের প্রায় ২ লাখ বানভাসি মানুষকে এখন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।