জিয়াউর রহমানের খেতাবে হাত নিলে পুঁড়ে ছাই হয়ে যাবে: গয়েশ্বর
নিউজ দর্পণ, ঢাকা: শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খেতাবে হাত নিলে সেই হাত পুঁড়ে ছাই হয়ে যাবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
আজ সোমবার দুপুরে এক বিক্ষোভ সভায় তিনি এই হুশিয়ারি দেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় ঢাকা জেলার উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়াউর রহমানরে বীর উত্তম খেতাবের বাতিলে সরকারি অপচেষ্টার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সভা হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, জিয়াউর রহমানের খেতাবে হাত দিলে সেই হাতে ফুসকা ফুটবে, আগুনে পুঁড়ার মতো ছাঁই হয়ে যাবে। এরা যে কত বড় একটা মহা কলঙ্কের তিলক নিজেদের কপালে আঁকার চেষ্টা করছে- এখনো বুঝছে না। কবি-সাহিত্যিক-গীতিকাররা সবপক্ষ যে গানের লাইনটি বলেন, মানি না, মানি না, কলঙ্ক আমার ভালো লাগেৃঅর্থাত কিছু কিছু লোকের কলঙ্কের তিলক পড়তে ভালো লাগে, সেই জাতের মধ্যে শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এই দেশটা প্রজাতন্ত্রের, সেই প্রজাতন্ত্রের নাম বাংলাদেশ। বাংলােেদ্শর মালিক জনগন। সেই জনগণের মালিকানা ফেরত আনার জন্যই আমাদের আগামী দিন পথ চলতে হবে। তাতে বাঁধা আসবে, বাঁধা অতিক্রম করতে হবে। লক্ষ্যে পৌঁছতে হবে। সেই গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, জিয়ার বাংলাদেশে জনগণের সামনে হাজির করতে হবে। এটাই হবে আমাদের জন্য বেস্ট রিভেঞ্জ। আমাদের অন্য কোনো প্রতিশোধ নাই। ইনস্টিড অব ডেমোক্রসি ইন দি বেস্ট রিভেঞ্জ ফর দি বিএনপি ফর খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এন্ড অল অব দি পিপলস এজওয়েল এজ। আমরা সেই প্রতিশোধের নেশায় মেতে উঠি, গণতন্ত্রকে ফেরত আনি।
সরকারের দমনপীড়নের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভুমিকার কঠোর সমালোচনা করে তাদেরকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি হিসেবে ‘নিরপেক্ষ’ ভুমিকা পালনের আহবানও জানান তিনি।
প্রতিবেশী দেশের তল্পিবাহক সরকার হিসেবে আখ্যায়িত করে গয়েশ্বর বলেন, গণতান্ত্রিক সরকারের সংঘা হলো, বাই দি পিপল, ফর দি পিপল, অব দি পিপল। আমি বছর ৭/৮ আগে বলেছিলাম যে, সি গর্ভামেন্ট নট বাই দি পিপল, নট ফর দি পিপল, নট বাই দি পিপল্। দিস গর্ভামেন্ট বাই দি ইন্ডিয়া, ফর দি ইন্ডিয়া, অব দি ইন্ডিয়া। সুতরাং আজকে যা কিছুই হচ্ছে সে বিষয়ে ভারতের একটি অংশ বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে না পেলেও মনের দিক থেকে তারা এই দেশটাকে শোষন করছে। শোষনের যে ক্ষেত্রস্থল তৈরি করার দায়িত্বটা শেখ হাসিনার নিয়েছেন। সেই কারণে বংশ পরমপরায় শেখ হাসিনা অর্থাত এই দলটি যেন তাদের খেদমতে সমসময় নিয়োজিত থাকতে পারেন সেজন্য তাদের একটা চেষ্টা আছে। জনগন তাদের সমর্থন করলো কি করলো না সেটা তাদের কাছে বড় বিষয় না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে, কর্মসূচির কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। আমাদেরকে জায়গা দেবেন না। এই বিস্তৃত বাংলাদেশে একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানিরা জায়গা দেয়নি। মুক্তিযোদ্ধারা লুঙ্গি পরে স্ট্যান গান নিয়ে ধান খেত, গম খেত, খালে-বিলে থেকে ওদেরকে প্রতিহত করেছে।
আপনারা প্রেস ক্লাবের সামনে হামলা করবেন, আপনারা পার্টি অফিসের সামনে হামলা করবেন, আপনারা রাজশাহীতে হামলা করবেন, আপনারা চট্টগ্রামে হামলা করবেন। আমাদেরও ধান ক্ষেত আছে, আমাদেরও খাল-বিল-নদীনালা আছে। প্রত্যেকটি জায়গা আমাদের দূর্গ, সেই সব দূর্গ থেকে আপনাদেরকে মোকাবিলা করা হবে।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের নাগরিক নয় বলে নৌ প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তাকে ‘বাকশিয়াল’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, এই যে কম্পিটেশন লেগে গেছে আকম মোজাম্মেলন হক, শাহজাহান খান। তখন নৌ প্রতিমন্ত্রী গতকাল বলে বসলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের লোকই ছিলেন না। আমি বললাম যে, এতোগুলো খেক শিয়াল, পাতি শিয়্লা.. মধ্যে আমি আরেকটা পেলাম বাকশিয়াল। এই বাকশিয়াল হচ্ছে এই সমস্ত নৌ প্রতিমন্ত্রী-টন্ত্রী, কতগুলো চামচা-টামচা আছে তারা।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আওয়ামী লীগে লাইট জ্বালিয়ে তো একটা বীর প্রতীক পাওয়া যাবে না। বীর উত্তম তো অনেক পরের ব্যাপার। রনাঙ্গনে এসব বীর মুক্তিযোদ্ধা নাই বলেই জিয়্উার রহমানকে খাটো করছে। কোনো লাভ হবে না। জনগন আপনাদের চিনে, আপনাদের চরিত্র সম্পর্কে জানে।
যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, বাংলাদেশের আকাশে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হচ্ছে প্রজ্জলিত সূরয। যেই সূরয কোনো দিন অস্ত্র যাবে না। চাঁদেরও কলঙ্ক আছে কবি-সাহিত্যিকরা বলেন। কোনো কলঙ্ক যেমন সূরযকে স্পর্শ করতে পারে না তেমনি শহীদ জিয়াকে ছোট করার কোনো চেষ্টাই কোনো দিন বাংলাদেশে সফল হবে ইনশাল্লাহ।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের পরিচালনায় বিক্ষোভ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, তমিজউদ্দিন আহমেদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ।