অসামাজিক চিন্তা
দোষে গুণেই মানুষ, তারা ভুল করেন অপরাধও করেন। ভুলের সংশোধন করার সুযোগ থেকে কিন্তু অপরাধের শাস্তি প্রযোজ্য ন্যায় বিচারের জন্য, তা না হলে সমাজে অপরাধ প্রবনতা বেড়ে যায়। প্রতিটা মানুষই মানসিক দিক দিয়ে খুব কাছাকাছি কিন্তু মানবিক গুণাবলি দ্বারা মানুষ মানুষকে সৃষ্টি করে। এই মানবিক গুণাবলি ক’জনের মাঝেই আছে আর ক’জনেই পারে তা প্রকাশ করতে।
মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে এখন যেন সব অসামাজিক হয়ে যাচ্ছে। গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম, অন্য যেকোনো মাধ্যমে ছবি আসছে নিউজ আসছে যিনি ভুল করেছেন তার সাথে যুক্ত করে দিচ্ছেন যিনি অপরাধ করেছেন ছবি ও নিউজ।
এভাবে ভুল আর অপরাধ একাকার হচ্ছে যার ফলে অপরাধীরা বার বার অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে। সমাজে দিনে দিনে অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধিই পাচ্ছে। এই যে ভুল আর অপরাধ গুলিকে একত্রে করে যারাই প্রচার করছেন তারা সচেতন ভাবে হোক কিংবা অসতর্ক বশত হোক কাজটা মোটেই ঠিক করছেন না।
বাংলাদেশের নাগরিকরা রাজনৈতিক বিবেচনায় দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে আছেন দুটো বৃহৎ রাজনৈতিক দল ও পরিবারকে ঘিরে, বর্তমানে এটাই বাস্তবতা। এখন যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় তারা এক যুগের অধিক সময় ধরে দখল করে আছেন নানান কৌশল অবলম্বনের মধ্যে দিয়ে।
তাদের কাছে দেশের স্বার্থের চেয়ে নিজেদের স্বার্থটাই বড় করে রক্ষা করে চলেছেন। এরকম পরিস্থিতিতে সুযোগ সন্ধানীরা সুযোগ নিতে পারদর্শী হয়ে ওঠে এবং তাই হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার লুটসহ সাহেদ, বাচ্চু, সম্রাট, পাপিয়ারা সারা দেশে কত নামেই ছড়িয়ে রয়েছেন। তার হিসাব করতে পারলে নামের তালিকা দিয়ে একটি বই প্রকাশিত হতে পারে।
এই অপকর্মের নায়ক নায়িকারা কত সতর্কভাবে দূর্নীতি দর্বৃত্তায়ন করে যাচ্ছেন তার মধ্যে বিছিন্ন ভাবে অনেক কিছু বেরিয়ে পড়ছে। যখনই এরকম কোনো দূর্বৃত্তায়নের খবর বড় করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে ওঠে তখনই বিপরীত দিক থেকে নানান কল্প কাহিনী রটনা আকারে রচিত হয়।
এই ধারাটা পূর্ববর্তী ফখরুদ্দিন সরকারের হাত ধরে এই সরকার শুরু থেকেই করে যাচ্ছেন অত্যন্ত সচেতন ভাবেই।
গত ৯ জুলাই ভার্চূয়াল আলোচনায় বিএনপি’র মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন, এই সরকার অত্যন্ত সচেতনার সাথে বিএনপি’র বিরুদ্ধে অপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এই আলোচনায় ছিলেন বাম জোটের সমন্নয়ক, ঐক্য ফ্রন্ট, বিশ দলীয় জোটসহ বিএনপি’র জাতীয় নেতৃবৃন্দ।
সরকার কেন সচেতনভাবে এই কাজটা করে যাচ্ছে তার অন্যতম কারণ একটাই- বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে ছিন্ন-বিছিন্ন করে দেওয়া এবং তার পরিবারকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করা।
গত প্রায় ১৫ বছর যাবত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের দেশপ্রেমিক নেতাকর্মীদেরকে দমন-পীড়নের মধ্যে দিয়ে বিছিন্ন করার চেষ্টা হচ্ছে। ইনশাল্লাহ একজন সাচ্চা কর্মীকেও সরাতে পারেনি এমনকি দলীয় প্রতীক ধানের শীষে একটা পোকাও ধরেনি। মাশাআল্লাহ।
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আগামীর কান্ডারী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী যখন তখন তাদের প্রয়োজনে মনের মাধুরী মিশিয়ে সুবিধা মতো সংবাদে যুক্ত করে কল্প কাহিনী রটিয়ে যাচ্ছেন।
দেশনায়ক তারেক রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেবার পর থেকে এখন পর্যন্ত যে সকল সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সবগুলো সামগ্রিক বিবেচনায় ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করছে। যার ফলে দুষ্টদের মুখে চুনকালি পড়ছে। দল ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজের মধ্যে দিয়ে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুনধারার রাজনৈতিক দৃষ্টান্ত স্থাপিত হচ্ছে। ঐক্যমতের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ সরকারের দাবী আদায়ের আন্দোলনে মনযোগ হচ্ছে। জনগণ বিশ্বাস করে, আগামী সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্টা হবে। ঐক্যমতের ভিত্তিতে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে কলাণ্যকর রাষ্ট্র এই প্রত্যয় সবার মাঝে।
এসময়ে সমাজের পরিচিত চেনা মুখ, যাদের অনেকটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, আছে সমাজের কাছে দায়বদ্ধতা, করে যাচ্ছেন ইতিবাচক কর্মকান্ড,তাদের চরিত্রহনন হচ্ছে দেখে শুনে দিব্যি কষ্ট পাচ্ছি। গন্ডদেশ বেয়ে তসবিহ মালার মতো গড়িয়ে পড়ছে ফোঁটা ফোঁটা চোখের পানি। আজকের সর্যলোক পুরনো বেদনাকে নতুন করে জাগিয়ে দিচ্ছে।
এই দেশের দেশপ্রেমিক নাগরিকদের মাঝে একবারেও কেঁপে ওঠে না? মনের ভেতরটা আলোড়িত হয়ে আপসোসের মতো একটা দীর্ঘশ্বাস জাগে না দেখে মনে পড়ছে রবিঠাকুরের সেই গানের কলি দুটি।
ফুলের বাহার নাইকো যাহার
ফসল তাহার ফলল না
দিনের আলো যার ফুরোল
সাঁঝের আলো জ্বলল না
দেশের এই সংকটকাল দেখতে দেখতে হয়তো নিজের বেদনাবোধের ঘনত্ব থেকেই মনে পড়ছে গানের কলি দুটি।
সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক এই প্রত্যাশা রইলো।
লেখক পরিচিতঃ
সহ-সভাপতি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা – জাসাস)